‘দেশ আগে, দল পরে’, থারুরের মন্তব্য কংগ্রেসের সঙ্গে বিচ্ছেদের জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিল?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫.৪০: সম্প্রতি বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে খবরের শিরোনামে এসেছেন কংগ্রেসের ‘তুখোড়’ নেতা শশী থারুর (Shashi Tharoor)। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিরুবনন্তপুরমে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরকে হারিয়ে কেরলের সাংসদ হন তিনি। তবে দলের সঙ্গে মতবিরোধ তাঁর অনেক দিনের আর সেই কারণে দলে তিনি অনেকদিন ধরেই কংগ্রেসে কোণঠাসা। কংগ্রেস নেতৃত্বের (Congress leadership) সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে কি না, এই জল্পনার মাঝেই শনিবার ‘জাতীয় স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলির সহযোগিতা জরুরি’ বলে মন্তব্য করলেন থারুর।
কেরলের কোচিতে (Kochi) ‘শান্তি, সম্প্রীতি ও জাতীয় উন্নয়ন’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দেশই প্রথম। রাজনৈতিক দল আসলে একটা মাধ্যম মাত্র, যার সাহায্যে আমরা দেশকে আরও উন্নত করতে পারি।’ থারুরের কথায়, ‘আপনার প্রথম আনুগত্য কার প্রতি হওয়া উচিত? আমার মতে, দেশ সবার আগে। দল হল একটা উপায়, যার মাধ্যমে আমরা দেশকে আরও ভাল রাখতে পারি। প্রত্যেক দলেরই নিজস্ব ভাবনা আছে দেশের উন্নয়নের পথে এবং তারা তাতে দ্বিমত পোষণ করতেই পারে।’
বিগত কয়েক মাসে তাঁর বেশ কিছু মন্তব্য দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। পহেলগাঁও হামলা, অপরাশেন সিঁদুর নিয়ে তিনি বেশ কিছু মন্তব্য করেছিলেন, যার সাথে তার দলের অবস্থানের বা মতামতের একেবারেই মিল ছিল না। আশ্চর্যজনক বিষয়, নীলাম্বুরের ফলাফলের দিন সকালে, দক্ষিণ ভারতের একটি ইংরেজি সংবাদপত্রে তার লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে “বিশ্ব মঞ্চে ভারতের প্রধান সম্পদ” বলে অভিহিত করেছেন। নিবন্ধটি ছিল মোদী সরকারের অপারেশন সিন্দুর অভিযান নিয়ে, যেখানে থারুর সাতটি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদলের (যারা বিশ্বজুড়ে অপারেশন সিঁদুরের প্রচারে গিয়েছিলেন) মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
কোচির অনুষ্ঠানে এক ছাত্র তাঁর সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করলে থারুর জানান, তাঁর মতো অনেকেই আছেন, যাঁরা দলের মূল্যবোধ এবং আদর্শকে শ্রদ্ধা করেন এবং সেই কারণেই দলে রয়েছেন। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য দলের সঙ্গে সহযোগিতা করাও জরুরি। অনেক সময় দল এই ধরনের অবস্থানকে অবিশ্বাস্য বা বিরোধিতা বলে ধরে নেয়। এখানেই মূল সমস্যা তৈরি হয়। গণতন্ত্রের পরিকাঠামো ও তাতে রাজনৈতিক দলের ভূমিতা ব্যাখ্যা করেন কংগ্রেস নেতা। তিনি মনে করেন, প্রতিযোগিতা থাকবেই। কিন্তু যখন জাতীয় সংকট দেখা দেয়বে, তখন একসঙ্গে কাজ করাটাই জরুরি। এরপরই ফের জল্পনা শুরু হয়েছে তাহলে কি থারুরের সঙ্গে কংগ্রেসের বিচ্ছেদ এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা?