Shahid Dibas: ২১ জুলাইয়ের আগে শহিদ স্মরণে আবেগঘন বার্তা মমতার

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯৩ সালের শহিদ দিবসে শহিদ হওয়া ১৩ জন তৃণমূল কর্মীর প্রতি জানালেন শ্রদ্ধা ও প্রণাম

July 20, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:৩০: রাত পোহালেই একুশে জুলাই । আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তার আগেই রবিবার এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) আবেগঘন বার্তায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯৩ সালের শহিদ দিবসে শহিদ হওয়া ১৩ জন কর্মীর প্রতি জানালেন শ্রদ্ধা ও প্রণাম। সেই সঙ্গে শহিদ তর্পণে রাজ্যের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের আবেদন জানালেন তিনি।

এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লিখেছেন,
“১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই আমাদের ১৩ জন সহযোদ্ধা সিপিআইএমের পুলিশের বর্বরোচিত অত্যাচার এবং নির্মম গুলিতে অকালে প্রাণ হারান। ঐ দিন বন্দন দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল, বিশ্বনাথ রায়, কল্যাণ ব্যানার্জী, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী, শ্রীকান্ত শর্মা, দিলীপ দাস, রঞ্জিত দাস, প্রদীপ রায়, মহম্মদ খালেক এবং ইনু শহিদ হন। তাঁদের বিনম্র চিত্তে প্রণাম জানাচ্ছি এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি।”

শুধু ১৯৯৩-র শহিদরাই নয়, তৃণমূল নেত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন সমস্ত আন্দোলন ও কর্মসূচিতে প্রাণ দেওয়া শহিদ ভাই-বোনেদের প্রতিও। মমতা আর‌ও লেখেন, “এছাড়াও, সকল ভাই-বোনেরা যাঁরা বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচিতে শহিদ হয়েছেন, তাঁদের সকলকে এই শহিদ তর্পণ দিবসে জানাই প্রণাম ও আন্তরিক শ্রদ্ধার্ঘ্য।”

একইসঙ্গে ধর্মতলার ২১ জুলাইয়ের সভায় যোগদানের জন্য রাজ্যবাসীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন,
“ধর্মতলায় বাংলার সকল মা-মাটি-মানুষকে আমার সাদর আমন্ত্রণ রইল। আসুন, মহান শহিদ তর্পণে অংশ নিন এবং একুশে জুলাইয়ের সমাবেশকে সাফল্যমণ্ডিত করুন।”

শুধু শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো নয়, তিনি রাজ্যবাসীকে মনে করিয়ে দিলেন, যেটা এখন সহজাত অধিকার বলে মনে হয়, নির্বিঘ্নে, নিঃশঙ্কয়ে, সম্মানের সঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগ। তা এক সময় বাংলার মানুষের কাছে স্বপ্ন ছিল।

এ প্রসঙ্গে মমতা এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন,
“ভোটাধিকারকে আমরা আজ যেভাবে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করি, একসময় তা বাংলার মানুষের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে গণতন্ত্রকে রুদ্ধ করা হয়েছিল, মতপ্রকাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। আমরা শহিদ দিবস পালন করি ১৩ জন বীর শহিদকে শ্রদ্ধা জানাতে, যাঁরা মা, মাটি ও মানুষের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই দিন আমাদের শপথ করায়—আমরা সংবিধানের মূল্যবোধকে যে কোনও মূল্যে রক্ষা করব।”

তিনি জানান, একুশে জুলাইয়ের মূল কর্মসূচির আগেই তিনি নিজে ধর্মতলা পরিদর্শনে যান। সেখানে মঞ্চের প্রস্তুতি, অতিথিদের আবাসনের ব্যবস্থা ও সাংবাদিকদের বসার স্থানসহ সবকিছু খতিয়ে দেখেন। বাংলার মানুষের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা, “আমি বাংলার মানুষকে বলছি, শান্তিপূর্ণভাবে আসুন, বৃহৎ সংখ্যায় আসুন। যদি বৃষ্টি হয়, সেটাকেও শহিদদের অশ্রু বলে ভাবুন, যা আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয় কেন আমরা একত্রিত হই, কেন আমরা স্মরণ করি, এবং কেন আমাদের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই থামানো চলবে না।”

উল্লেখ্য, এবার একুশে জুলাই সমাবেশের মূল মঞ্চটি ত্রিস্তরীয় এবং আড়ে-বহরে অনেকটা বড়। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তিন ধাপে তৈরি মঞ্চে বসবেন শীর্ষ নেতৃত্ব, অতিথি, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, শহিদ পরিবারের সদস্যরা। প্রথম মঞ্চটি মাটি থেকে ১১ ফুট উঁচু, দ্বিতীয় ও তৃতীয়টির উচ্চতা যথাক্রমে ১২ ও ১৩ ফুট। মঞ্চের দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট, প্রস্থ ৪২ ফুট। গোটা মঞ্চ ঘিরে ফেলা হবে দলীয় পতাকা তেরঙ্গার রঙে। আরও জানা যাচ্ছে, তিনটি মঞ্চের প্রথমটিতে থাকবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের প্রথম সারির শীর্ষ নেতারা। দ্বিতীয় মঞ্চে থাকবেন শহিদ পরিবারের সদস্যরা। আর মঞ্চের তৃতীয়ভাগে থাকবেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen