SIR: বিহারে ৭৪ লক্ষ ভোটারের অস্তিত্বের প্রমাণের দায় রাজনৈতিক দলগুলোর উপর ঠেলে দিল কমিশন

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:৩৬: ভোটমুখী বিহারে চলছে ভোটার তালিকার ইন্টেনসিভ রিভিশনের কাজ। আর কয়েকটা দিন পরই প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা। কমিশন জানিয়েছে, বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার পর প্রায় ৭৪ লক্ষ ভোটারের খোঁজ পায়নি তারা। এবার রাজনৈতিক দলগুলির উপর নিখোঁজ ভোটারদের দায় ঠেলেছে তারা। ২৬ জুলাই রিভিশনে আবেদন জানানোর শেষ দিন। তার মধ্যে দলগুলিকে ৭৪ লক্ষ ভোটারের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে হবে। না হলে তালিকা থেকে বাদ যাবে ৭৪ লক্ষ ভোটারের নাম।
বিহারের স্বীকৃত ১২টি রাজনৈতিক দলের জেলা সভাপতিদের এই বিপুল সংখ্যক নিখোঁজ ভোটারদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব দিয়েছে কমিশন। বলা হয়েছে, “সব দলের জেলা সভাপতিরা, তাদের বুথ লেভেল এজেন্টদের মাধ্যমে এই বিপুল সংখ্যক নিখোঁজ ভোটারদের খুঁজে বের করুন।” কমিশনের দাবি, কোনও যোগ্য ভোটার যাতে তালিকা থেকে বাদ না-পড়েন সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে এমনটা করতে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এসআইআরের জেরে বিপুল সংখ্যক ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়লে, যাতে দায় কেবল তাদের উপর না-এসে পড়ে, সে কারণে এই পন্থা নিয়েছে কমিশন।
নথিভুক্ত ঠিকানায় মোট ৫২ লক্ষ ৩০ হাজার ১২৬ জন, অর্থাৎ ৬.৬২ শতাংশ ভোটারের খোঁজ মেলেনি। ২৬ জুলাই বিহারে ইনিউমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। গণনা ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য হাতে রয়েছে মাত্র চারদিন। কমিশন জানিয়েছে, এদিন পর্যন্ত ২১.৩৬ লক্ষ মানুষ গণনা ফর্ম জমা দেননি। এই বিপুল সংখ্যক ভোটার খুঁজে না-পাওয়া গেলে, বা তাদের ফর্ম জমা না-পড়লে তাঁরা ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।
নিজেদের ঘাড় থেকে কি দায় ঝেরে ফেলতে চাইছে কমিশন? আরজেডির দাবি, যেসব জায়গায় বিজেপি পিছিয়ে রয়েছে, সেখানেই ভোটার নিখোঁজের তত্ত্ব সামনে আসছে। গত লোকসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের সঙ্গে জোট গড়ে নির্বাচনে লড়েছিল বিজেপি। ১১০টি আসনে প্রার্থী দিলেও তাদের ঝুলিতে গিয়েছিল ৭৪টি আসন। ১১৫টি আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র ৪৩টি আসনে জয় পেয়েছিল জেডিইউ। আসন্ন বিধানসভা ভোটে তাই কি কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না গেরুয়া শিবির? অভিযোগ, ভোটার তালিকার দিক থেকে বিজেপি নিশ্চিত থাকতে মরিয়া হয়ে এই উদ্যোগ নিচ্ছে।
অন্যদিকে, বিহারের পরই বাংলায় এসআইআর শুরুর কথা। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহ থেকে জেলায় জেলায় বিএলওদের প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এসআইআর শুরুর আগে থেকেই বাংলায় বিপুল সংখ্যক ভুয়ো ভোটার তালিকা তৈরি করে ফেলেছে বিজেপি। বিজেপির লক্ষ্য ২০২৬-এ বাংলা দখল। তাই কি এসআইআর শুরুর আগেই কমিশনকে চাপে রাখতে মরিয়া বিজেপি?