SIR নিয়ে এবার বিদ্রোহ মোদী সরকারের অন্দরেই!
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:০০: চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে ভোটার তালিকার এসআইআর করতে গিয়ে আগেই বিতর্কের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার দলের সমাবেশে অভিযোগ তুলেছিলেন, ৪০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে পড়শি রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভা ভোটে একই কায়দায় কমিশন নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বস্তুত, বিহারের ভোটার তালিকায় নাম ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে কমিশনের ঘোষণা মমতার দাবিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। কারণ, মঙ্গলবার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, নতুন তালিকা থেকে প্রায় ৫২ লক্ষ ‘মৃত, স্থানান্তরিত এবং অযোগ্য’ নাম বাদ পড়তে পারে। বুধবার কমিশন জানিয়েছে, সংশোধিত ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে অন্তত ৫৬ লক্ষ নাম। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (SIR) নিয়ে এবার বিদ্রোহ মোদী সরকারের অন্দরে! বিরোধীদের সুরেই সরব হতে শুরু করল বিজেপির জোটশরিকদের একাংশ। এমনকী স্বয়ং নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল (JDU) পর্যন্ত। বুধবার সংসদ ভবনে হঠাৎই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বাঁকা লোকসভা কেন্দ্রের জেডিইউ এমপি গিরিধারী যাদব। বলেছেন, ‘স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন বিহারবাসীর উপর জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিহারের (Bihar) ইতিহাস সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন কিছুই জানে না। কোনও বাস্তব জ্ঞানই নেই। কমিশন বিহারের ইতিহাস কিংবা ভূগোল কিছুই না জেনেই এরকম একটি বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক মাসের মধ্যে সব নথিপত্র দেখাতে হবে, জমা দিতে হবে। এটা কি ছেলেখেলা হচ্ছে?’
গিরিধারী যাদব একাই সরব, তা কিন্তু নয়। এনডিএ জোটের শরিক মহারাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টি অব ইন্ডিয়ার (আরপিআই) সভাপতি রামদাস আটাওয়ালেও সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন। বলেছেন, ‘ভোটার তালিকা রিভিশন ইস্যুতে বিরোধীরা আপত্তি করছে ঠিকই। কিন্তু সেজন্য দিনের পর দিন সংসদের সভা অচল করে রাখা ঠিক নয়। তৃণমূলস্তরে কী চলছে, সেটাও কমিশনকে দেখতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অবস্থানও তো মানতে হবে সকলকে।’ আটাওয়ালে যেন বিজেপিকেই কার্যত মনে করিয়েছেন যে, বিরোধীরা যাদের হয়ে কথা বলছে, যাদের নাম বাদ যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা কি শুধুই ওদের ভোটার নাকি? তারা তো আমাদেরও ভোটার! কারণ, আরপিআই মহারাষ্ট্রের অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে। আর বিরোধীরা এই ইস্যুতে সবথেকে বেশি যে প্রচার করছে, সেটি হল— নির্বাচন কমিশনের এই তুঘলকি সিদ্ধান্তে সবথেকে বেশি নাম বাদ যাবে অনগ্রসরদের। বিজেপি আর কমিশন মিলেমিশে পিছড়ে বর্গকে ভোটাধিকার থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। স্বাভাবিকভাবে সেই কারণে এনডিএ শরিকদের সকলে একে একে উদ্বিগ্ন। এই ইস্যুতে বিজেপি-সঙ্গ, তাদের ভোটব্যাঙ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।