ডবল ইঞ্জিন মহারাষ্ট্রে বাঙালি শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু, খুনের অভিযোগ পরিবারের
‘বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য’ তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবং উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ৮:৫০: মহারাষ্ট্রের পুনেতে কর্মরত এক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতের নাম দীপু দাস (২৮), তিনি পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের বিন্নাগুড়ি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, দীপুকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় ‘বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য’ তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবং উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, দীপু দাস পুনেতে এক ঠিকাদারের অধীনে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত মঙ্গলবার ওই ঠিকাদার দীপুর পরিবারকে ফোন করে জানান যে, একটি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে দীপু হাসপাতালে ভর্তি। এর ঠিক পরের দিনই, বুধবার, তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এরপরেই মৃতের ছবি পরিবারের মোবাইলে পাঠানো হলে সন্দেহ দানা বাঁধে।
মৃতের ভাই অপু দাসের অভিযোগ, ছবিতে দীপুর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা গেছে, বিশেষ করে তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের দাগ ছিল। অপু দাস বলেন, “দুর্ঘটনা ঘটলে হাত-পা ভাঙতে পারে, কিন্তু গলায় ধারালো অস্ত্রের দাগ থাকবে কেন? আমাদের সন্দেহ দাদাকে খুন করা হয়েছে।” এই ঘটনায় পরিবার রাজগঞ্জ থানার দ্বারস্থ হয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
পরিবারের তরফে আরও জানানো হয়েছে, সোমবারই তাঁদের মা শীলা সরকার দাস লিভারের অসুখে মারা যান। এই দুঃসংবাদের মধ্যেই দীপুর মৃত্যুর খবরে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপও ছড়িয়েছে। রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে বাঙালি শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “বাংলায় কথা বলার জন্য এর আগেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এক্ষেত্রেও তেমন কিছু হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।” তিনি রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানিয়েছেন।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, তারা পুনে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং যত দ্রুত সম্ভব দেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। পুনে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। তবে, এটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত খুন, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানানো হয়নি। এই ঘটনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং ভিন রাজ্যে তাদের কাজের পরিবেশ নিয়ে আবারও বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল।