স্বাধীনতার লড়াইয়ে বীর বাঙালির অবদানকে ভুলিয়ে দিতে চাইছে BJP? অভিযোগ তৃণমূলের

তৃণমূল সাংসদের কথায়, জেলটায় গেলে মনে হয় সেখানে সাভারকার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না! গোটা জেলটা প্রায় তাঁর নামেই উৎসর্গীকৃত।

August 1, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:৫৬: দেশজুড়ে বাঙালি হেনস্থা চলছে, এই আবহে রাজ্যসভার তৃণমূলের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন। তাঁর অভিযোগ, স্বাধীনতার লড়াইয়ে যাঁদের ভূমিকা ছিল না, তাঁরা বীর বাঙালির গাথা ভুলিয়ে দিতে চাইছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এক লিখিত প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আন্দামান সেলুলার জেলে চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ ও সেই বিদ্রোহে কালাপানির সাজাপ্রাপ্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক নায়কদের নিয়ে কোনও বিশেষ গ্যালারি রয়েছে কি-না। এমন কোনও বিশেষ গ্যালারি সেখানে নেই বলেই জানিয়েছে কেন্দ্র। এরকম কোনও গ্যালারির পরিকল্পনাও নেই বলেন উত্তরে উল্লেখ করেছে বিজেপি সরকার। তাঁর কথায়, “এই কেন্দ্রীয় সরকার বাংলা বিরোধী, বাঙালি বিরোধী, বাংলা ভাষাভাষী বিরোধী। প্রতিটি ঘটনায় ফুটে উঠছে বাংলা এদের চোখের বালি।”

বাংলার এক প্রথম সারির দৈনিকের ডিজিটাল সংস্করণকে ঋতব্রত জানান, “দেশের মানুষের তীর্থস্থান আন্দামান সেলুলার জেল। সবাই জানেন, সেই জেলে যে ৫৮৫ জন ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৯৮ জন অবিভক্ত বাংলার। অর্থাৎ বাঙালি। প্রথম পর্যায়ে সেখানে ছিলেন উল্লাসকর দত্ত, বারীন ঘোষরা। সরকার আগেই জানিয়ে দিয়েছে, যে এই সব মহান বিপ্লবীদের কোনও মূর্তি সেলুলার জেলে বসানোর পরিকল্পনা নেই। পরবর্তী যে বীর বাঙালিরা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১৭ জনের কথা আমি আজ জানতে চেয়েছিলাম। এঁরা চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন। যাদের বয়স আঠেরোর কম ছিল, তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়নি। সতেরো জনের দ্বীপান্তরের আদেশ হয়। সেদিন বীর বাঙালিরা চট্টগ্রামে যা ঘটিয়েছিলেন, এর কোনও তুলনা হয় না। আমি জানতে চেয়েছিলাম ওই বিপ্লবীদের কোনও আলাদা গ্যালারি আছে কি-না। সরকার জানিয়ে দিয়েছে নেই। এবং আগামীদিনে করার পরিকল্পনাও নেই।”

তৃণমূল সাংসদের কথায়, জেলটায় গেলে মনে হয় সেখানে সাভারকার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না! গোটা জেলটা প্রায় তাঁর নামেই উৎসর্গীকৃত। যিনি বারবার মুচলেকা দিয়েছিলেন ব্রিটিশদের কাছে। তিনি আরও জানান, সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জেলের ভিতরে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের যে গ্যালারি রয়েছে সেখানে রয়েছে চট্টগ্রামের ওই বিপ্লবীদেরও নাম ও ছবি রয়েছে। ঋতব্রতর দাবি, সরকার জানাচ্ছে ১৬ জনের কথা। অথচ চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে সাজাপ্রাপ্ত কিশোরের সংখ্যা ছিল ১৭! তাছাড়া কেবল নাম ও ছবি ছাড়া আর কোনও পরিচয়ও সেখানে লিপিবদ্ধ করা নেই।

আলিপুর জেল মিউজিয়ামের উল্লেখ করে ঋতব্রতের দাবি, সেখানে সযত্নে বাঙালির বীরত্বের ইতিহাসকে সম্মানিত করা হয়েছে। অথচ সেলুলার জেলে এমনটা হয়নি। ঋতব্রতর অভিযোগ, “পুনরায় ইতিহাস লেখার চেষ্টা হচ্ছে। আর তা করতে গেলে বাঙালিকে মুছে না দিলে হবে না! স্বাধীনতার লড়াইয়ে যাদের ভূমিকা ছিল না তারা বীর বাঙালির গাথা ভুলিয়ে দিতে চাইছে। এটা হতে পারে না।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen