ধর্ষণ বা গণধর্ষণের মতো ঘটনা এড়াতে মহিলাদের ঘরে বসে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে গুজরাতের BJP সরকার?
‘রাতে পার্টি করতে যেও না, ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারে’। আমেদাবাদ শহর জুড়ে পড়েছে এমনই পোস্টার। সৌজন্যে, আমেদাবাদ ট্র্যাফিক পুলিশ।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯.৩৬: ‘রাতে পার্টি করতে যেও না, ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারে’। আমেদাবাদ শহর জুড়ে পড়েছে এমনই পোস্টার। সৌজন্যে, আমেদাবাদ ট্র্যাফিক পুলিশ। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও।
প্রশ্ন উঠছে তাহলে কী ধর্ষণ বা গণধর্ষণের মতো ঘটনা এড়াতে মহিলাদের ঘরে বসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে! পোস্টারে মেয়েদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে, হে রঙ্গলি, নাইট পার্টিতে যেও না…ধর্ষণ…গণধর্ষণ হতে পারে। পুরুষদের জন্য লেখা রয়েছে, হে রঙ্গলা, বান্ধবীদের অন্ধকার নির্জন এলাকায় নিয়ে যেও না। ধর্ষণ…গণধর্ষণ হয়ে গেলে কী করবে? এই পোস্টার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যেতেই অস্বস্তিতে পড়ে আমদাবাদ পুলিশ। বিশেষ করে নারীবাদী সংগঠনগুলি, রাজনৈতিক দল কেউই ছেড়ে কথা বলতে কসুর করেনি।
বিতর্কিত এই পোস্টারগুলি ঘিরে অস্বস্তিতে পড়েছে প্রশাসনও। অহমদাবাদের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক পশ্চিম) নীতা দেসাইয়ের বক্তব্য, ‘সতর্ক গ্রুপ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই পোস্টারগুলি তৈরি করেছে। ট্রাফিক পুলিশের অনুমতি না নিয়েই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পোস্টারগুলি ছাপিয়েছে বলে দাবি তাঁর। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানান, পথসুরক্ষা সংক্রান্ত সচেতনতায় একটি কর্মসূচির জন্য ওই সংগঠন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কেবলমাত্র পথসুরক্ষা সংক্রান্ত পোস্টারগুলিই ট্রাফিক পুলিশের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাপানো হয়েছে। নারীসুরক্ষা সংক্রান্ত কর্মসূচির জন্য নয়।
তবে পুলিশি ‘পৃষ্ঠপোষকতা’য় এমন বিতর্কিত পোস্টার ছড়ানোয় বিজেপি শাসিত গুজরাতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। আম আদমি পার্টির দাবি, এই পোস্টারগুলি সে রাজ্যে মহিলার নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিস্থিতিকেই তুলে ধরে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “গুজরাতের বিজেপি সরকার নারী ক্ষমতায়নের কথা বলে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। গত তিন বছরে গুজরাতে সাড়ে ছ’হাজারেরও বেশি ধর্ষণ এবং ৩৬ টিরও বেশি গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছ। প্রতিদিন পাঁচটিরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।”
শাসকদল বিজেপিকে বিঁধে কংগ্রেস বলেছে, পুলিশের নামেই যখন স্বীকার করে নেওয়া হচ্ছে যে, এ রাজ্য মহিলাদের পক্ষে নিরাপদ নয়, তখন তা পুরোপুরি সরকারের ব্যর্থতা। রাজ্যে প্রতিদিন গড়ে ৬ জন করে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু, সরকার কোনও ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ। বিরোধী নেতাদের উপর গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে সরকারের উচিত মেয়েদের সুরক্ষায় নজর দেওয়া।