নির্বাচন কমিশন ঘেরাও থেকে স্পোর্টস বিল – মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ INDIA জোট
বুধবার সকাল সোয়া দশটা নাগাদ বাংলা ভাষার অপমানের প্রতিবাদে তৃণমূলের দুই কক্ষের সাংসদেরা বিক্ষোভ দেখান সংসদ চত্বরে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৫৫: বাদল অধিবেশনে বিরোধী জোটের কাছে কার্যত নাজেহাল হচ্ছে সরকার পক্ষ। SIR নিয়ে আলোচনার দাবিতে অনড় ইন্ডিয়া শিবির। আজ সকাল দশটা নাগাদ রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়গের ঘরে বৈঠকে বসে বিরোধী শিবির। জানা যাচ্ছে, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লোকসভায় তৃণমূল মুখ্যসচেতক কাকলি ঘোষদস্তিদার, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ অধ্যাপক রামগোপাল যাদব, ডিএমকে-র কানিমঝি, আরজেডি-র প্রেমচাঁদ গুপ্তা, শিবসেনার উদ্ধব শিবিরের সঞ্জয় রাউত। সূত্রের খবর, ইন্ডিয়ার সব শরিক দলই SIR নিয়ে আলোচনার দাবিতে অনড় এবং ঐক্যমত হন। অন্য বিষয় নয় SIR নিয়ে আলোচনা করতেই হবে, এটাই সরকারের কাছে দাবি তাদের। অন্যদিকে, বিরোধী সাংসদদেরা SIR নিয়ে আলোচনার দাবিতে লাগাতার মুলতুবি প্রস্তাব দিয়ে চলেছেন। সূত্রের খবর, কংগ্রেস ও তৃণমূলের কাছে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের দিন বদলের কারণ জানতে চান অন্য শরিকেরা। জানানো হয়, রাখি বন্ধনের কারণে ঘেরাওয়ের দিন বদল করা হয়েছে। ঘেরাও হবেই। আগামী সোমবার (১১ আগস্ট) নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের দিন ঠিক হয়েছে। জানা যাচ্ছে, সমন্বয়ের কথা মাথায় রেখে ঘেরাও কর্মসূচি পরিচালনার জন্য একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। ঠিক হয়েছে প্রথমে সাংসদেরা সংসদভবনে পৌঁছবেন। তারপর মিছিল করে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে যাবেন।
অন্যদিকে, স্পোর্টস বিলের বিরোধিতায় সরব তৃণমূল। ক্রীড়াজগতের তিন কিংবদন্তি তৃণমূলের লোকসভার সদস্য। ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী দুই তারকা কীর্তি আজাদ, ইউসুফ পাঠান এবং ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের বক্তব্য, স্পোর্টস বিল খুবই বাজে। সূত্রের খবর, বিরোধীদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, স্পোর্টস বিল আলোচনা ছাড়া পাশ না-করার দাবি জানিয়ে বিরোধী সাংসদেরা স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তাঁকে চিঠিও লিখবেন। বিরোধীদের অভিযোগ, কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই এখন অধিকাংশ বিল পাশ হচ্ছে। উল্লেখ্য, অতীতে প্রতি দশটি বিলের মধ্যে সাতটি বিল পর্যালোচনার জন্য নানান কমিটিতে পাঠানো হত। এখন সেই সংখ্যাটা দুয়ে নেমে এসেছে। বিরোধীদের দাবি, পর্যালোচনার ছাড়া যেন কোনও বিল পাশ না করা হয়। এই দাবি নিয়ে কাকলি ঘোষদস্তিদার (তৃণমূল), গৌরব গগৈ (কংগ্রেস), অরবিন্দ সাওয়ান্ত (শিবসেনা), ধর্মেন্দ্র যাদব (সমাজবাদী পার্টি), সুপ্রিয়া সুলে (এনসিপি), কানিমঝি (ডিএমকে) প্রমুখেরা লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সূত্রের খবর, অধ্যক্ষ তাঁদের আশ্বাস্ত করেছেন।
আজ, বুধবার সকাল সোয়া দশটা নাগাদ বাংলা ভাষার অপমানের প্রতিবাদে তৃণমূলের দুই কক্ষের সাংসদেরা বিক্ষোভ দেখান সংসদ চত্বরে। সাড়ে দশটা নাগাদ SIR-র প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী শিবিরের সাংসদেরা। ইন্ডিয়া শিবিরের প্রায় দুশো জন সাংসদ গোটা সংসদভবন চত্বরে হেঁটে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
আগামীকাল, ৭ আগস্ট ইন্ডিয়া জোটের নৈশভোজ রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, বিরোধী শিবিরের একাধিক দলের প্রতিনিধিরা তাতে যোগ দেবে। তৃণমূলের লোকসভার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নৈশভোজে উপস্থিত থাকতে পারেন। এছাড়াও নৈশভোজে যোগ দিতে পারেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, শিবসেনার নেতা উদ্ধব ঠাকরে। সূত্রের খবর, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন সম্ভবত নৈশভোজে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
ইন্ডিয়া শিবির কার্যত জোট বেঁধে সংসদে বিজেপি সরকারকে চেপে ধরেছে। প্রায় তিন সপ্তাহ অতিক্রান্ত কিন্তু বাদল অধিবেশনে সরকার পক্ষ দাঁত ফোটাতে পারছে না। একের পর এক কর্মসূচি নিচ্ছে বিরোধী শিবির। সম্মিলিত প্রতিবাদের জেরে ক্রমশ মোদী ব্রিগেডের চাপ বাড়ছে। এখন দেখার বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলো আদৌ সংসদ সচল থাকে না-কি!