RTI-এর বাইরে BCCI! ক্রীড়া শাসন বিলের সংশোধনে উঠছে প্রশ্ন
নতুন সংশোধিত ধারায় বলা হয়েছে, কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত ক্রীড়া সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেই RTI প্রযোজ্য হবে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:৪১: ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) এবার (RTI)-এর আওতার বাইরে থাকছে। সম্প্রতি সংসদে পেশ হওয়া ‘জাতীয় ক্রীড়া শাসন বিল’-এ বড়সড় পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত কার্যত স্পষ্ট করে দিল কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। বিরোধীদের একরোখা অবস্থানে বুধবার ক্রীড়া সংক্রান্ত দুটি বিল পাশ করানোর জন্য তালিকাবদ্ধ করেও আর এগোয়নি। হই হট্টগোলের মধ্যে পাশ না করে বিল দুটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর দাবিতে সকালে স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কাকলি ঘোষদস্তিদার, কে সি বেণুগোপাল, কানিমোঝির মতো বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা। স্পিকারকে চিঠিও দেন। সঙ্গে সঙ্গে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজুকে ডেকে পাঠান স্পিকার। সেখানে বিরোধীদের কথা মেনে নেন তিনি।
মূল বিলের ১৫(২) ধারা অনুসারে, যেকোনও স্বীকৃত ক্রীড়া সংস্থাকে RTI আইনের আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব ছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, এমন সংস্থাগুলি তাদের কার্যকলাপ, দায়িত্ব এবং ক্ষমতা সংক্রান্ত যেকোনও বিষয়ে তথ্য দিতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই ধারা বিল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন সংশোধিত ধারায় বলা হয়েছে, কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত ক্রীড়া সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেই RTI প্রযোজ্য হবে, তাও শুধু সেই অনুদানের ব্যবহারের ব্যাপারে।
BCCI দীর্ঘদিন ধরেই RTI আইনের আওতায় আসার বিরোধিতা করে এসেছে। তাদের যুক্তি, তারা সরকারের অর্থে চলে না এবং স্বাধীনভাবে পরিচালিত একটি সংগঠন। RTI আইনে ‘public authority’ অর্থাৎ ‘জন কর্তৃপক্ষ’ বলতে বোঝানো হয়েছে সেই সব প্রতিষ্ঠানকে যারা আইন দ্বারা গঠিত বা সরকার দ্বারা ‘গুরুত্বপূর্ণভাবে অর্থায়িত’। এই ‘গুরুত্বপূর্ণভাবে অর্থায়িত’ শব্দ এবার ছড়িয়ে দিয়েছে BCCI-কে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, যদি ভবিষ্যতে BCCI কোনওভাবে সরকারী অনুদান, সহায়তা বা পরিকাঠামো ব্যবহার করে, তাহলে সেই প্রসঙ্গে RTI-এর মাধ্যমে প্রশ্ন তোলা যাবে। এছাড়াও, নতুন আইনের মাধ্যমে BCCI-কে ‘Ethics Commission’, ‘Athletes Committee’ এবং ‘Safe Sports Policy’ গঠন করতেও বাধ্য করা হবে।
একইসঙ্গে বিলের সংশোধিত রূপে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, রাজ্যের সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী রেজিস্টার হওয়া সংগঠনগুলিও স্বীকৃতি পাবে। ফলে তামিলনাড়ু সোসাইটি অ্যাক্টে নথিভুক্ত BCCI এই আইনের আওতায় আসবে, যদিও RTI-এর না।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত লোধা কমিটি এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালের আইন কমিশনের রিপোর্টেও BCCI-কে RTI-র আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় সরকার আইন সংশোধন করে কার্যত সেই দাবিকে পাশ কাটিয়ে গেল।
এই পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকের মতে, দেশের সবচেয়ে ধনী এবং প্রভাবশালী ক্রীড়া সংস্থাকে স্বচ্ছতার আওতার বাইরে রাখা, ক্রীড়া প্রশাসনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বড় বাধা। এখন দেখার বিষয়, সংসদে এই বিল কেমন প্রতিক্রিয়া পায়।