সংসদে লিখিত প্রশ্নে মোদী সরকারের উপর Surgical Strike তৃণমূলের, কোন ভয়ে জবাব এড়াচ্ছে কেন্দ্র?
SIR এবং বাঙালি হেনস্থা, জোড়া ইস্যুতে কার্যত সংসদে মোদী সরকারকে চেপে ধরেছে তৃণমূল সহ বিরোধীরা।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:০০: SIR এবং বাঙালি হেনস্থা, জোড়া ইস্যুতে কার্যত সংসদে মোদী সরকারকে চেপে ধরেছে তৃণমূল সহ বিরোধীরা। অন্যদিকে, সংসদের দুই কক্ষে তৃণমূল সাংসদদের প্রশ্নবাণে নাজেহাল হচ্ছে সরকারপক্ষ।
তৃণমূল সাংসদদের ১৫ প্রশ্নে কার্যত বিধ্বস্ত হয়েছে মোদী শিবির। মন্ত্রকের পারফরম্যান্স নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এসবই লিখিত প্রশ্ন, তার জবাবও মিলছে লিখিত আকারেই।
তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে উঠে এসেছে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের অধীনে মোট ১৩৩৭টি স্টেশনের উন্নয়ন করা হবে৷ এখনও পর্যন্ত মাত্র ১০৫টি স্টেশনের উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে৷ পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৮ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছে রেল মন্ত্রক৷ রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের প্রশ্নে জানা গিয়েছে কত শূন্য পদ রয়েছে আধা সেনায়, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে কোঅপারেশন মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ নিজেই জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের প্রাইমারি এগ্রিকালচারাল কোঅপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটিগুলিতে কম্পিউটার বসানোর প্রকল্পে গত তিন বছরে রাজ্যকে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র কার্যত মেনে নিয়েছে, একশো দিনের প্রকল্পের সরঞ্জাম বাবদ বিভিন্ন রাজ্যের প্রাপ্য টাকার পরিমাণ এখনও প্রায় ৭৫০০ কোটি টাকা৷ উঠে এসেছে বাংলার বকেয়ার পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্যও। মহুয়া প্রশ্ন করেছিলেন, ১০০ দিনের কাজের তহবিল থেকে বাংলার জন্য কত টাকা ছাড়া হয়েছে? সেই প্রশ্নে পুরনো বকেয়ার কথা উল্লেখ করেছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।
কেন্দ্র সরকার লিখিতভাবে প্রশ্নের জবাব দিলে তা সরকারি নথিতে পরিণত হয়। তাকেই হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্র। মৌখিক জবাবের বদলে লিখিত উত্তরকে বিজেপি তথা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারের উপজীব্য করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলার শাসক দল। এর নেপথ্যে অভিষেকের কৌশলগত ছাপ দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অভিষেক বিরোধী ভাষ্য তৈরির প্রাথমিক কাজ, তথ্য, প্রমাণ প্রস্তুত রাখতে চান। কেন্দ্রের দেওয়া নথি ও তথ্য দিয়েই কেন্দ্রের শাসক দলকে পরাজিত করার নীলনকশা সাজিয়েছে তৃণমূল।
এই প্রবণতা বুঝেই কি তৃণমূল সাংসদদের প্রশ্নের জবাব এড়াচ্ছেন মোদীর মন্ত্রীরা? তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত প্রশ্নে বিশদে লিখিত জবাব দেয়নি কেন্দ্রীর তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রক। বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ কমিউনিকেশন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের বিজ্ঞাপন দেয়। সেই ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দিয়ে ডেরেকের উদ্দেশে লেখা হয়েছে, সেখানেই বিশদ তথ্য রয়েছে। সাংসদ মালা রায়ের নাগরিকত্বের নথি সংক্রান্ত প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দেয়নি কেন্দ্র। পাঠ্যক্রম থেকে টিপু সুলতান বাদ পড়ায় প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তারও স্পষ্ট জবাব মেলেনি। বিজেপির অস্বস্তি কমাতেই কি জবাব এড়াচ্ছেন বিজেপির মন্ত্রীরা? না-কি রাজনৈতিক ভাষ্য তৈরি রুখতে সাবধানী মোদী-শাহ?