এআইএফএফ-কে একহাত মোহনবাগানের, জাতীয় ক্যাম্পে খেলোয়াড় ছাড়তে নারাজ সবুজ-মেরুন!
জাতীয় শিবিরে যোগ দেয়নি ১৩ জন ফুটবলার, যার মধ্যে সাতজনই মোহনবাগানের। ডুরান্ড কাপে হেরে বিদায় নেওয়ার পরও খেলোয়াড় ছাড়তে নারাজ সবুজ-মেরুন শিবির।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৩৪: ভারতীয় ফুটবলে ফের ক্লাব বনাম ফেডারেশন টানাপোড়েন সামনে এলো। আইএসএল চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট সোমবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, চলতি জাতীয় ক্যাম্পে তারা কোনো খেলোয়াড় ছাড়বে না। ক্লাব কর্তাদের অভিযোগ—ফিফা উইন্ডো না হলে খেলোয়াড় ছাড়ার নিয়ম বাধ্যতামূলক নয়, আর ফেডারেশন বারবার ফুটবলারদের চোট নিয়ে উদাসীন থেকেছে।
১৫ আগস্ট থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হয়েছে সিনিয়র জাতীয় দলের প্রস্তুতি শিবির। আগামী মাসে অনুষ্ঠিত সিএএফএ নেশনস কাপের আগে এই ক্যাম্পকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছে এআইএফএফ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জাতীয় শিবিরে যোগ দেয়নি ১৩ জন ফুটবলার, যার মধ্যে সাতজনই মোহনবাগানের। নামগুলির মধ্যে রয়েছেন অনিরুদ্ধ থাপা, দীপক টাংরি, লালেংমাওয়া, লিস্টন কোলাসো,মানবীর সিং, সাহাল আব্দুল সামাদ এবং গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। এঁদের মধ্যে মানবীর সিং ইতিমধ্যেই চোটগ্রস্ত।
ডুরান্ড কাপে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ১-২ ফলে হেরে বিদায় নেওয়ার পরও খেলোয়াড় ছাড়তে নারাজ সবুজ-মেরুন শিবির। কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে আসন্ন এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টু অভিযান। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর সল্টলেক স্টেডিয়ামে তুর্কমেনিস্তানের আহাল এফসি-র বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে নামবে মেরিনার্সরা। সেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে দলের সেরা ফুটবলারদের হাতে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।
ক্লাবের এক শীর্ষ কর্তা অভিযোগ করেছেন, “প্রতিবার জাতীয় দলে গিয়ে আমাদের ফুটবলাররা চোট নিয়ে ফিরে আসে। কিন্তু ফেডারেশন কোনো খোঁজ নেয় না, ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা। আমাদের অধিনায়ক শুভাশিস বসু এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে চোট পেয়ে এখনও মাঠে ফিরতে পারেননি। ওর পুরো বেতন আমরা দিচ্ছি, অথচ এআইএফএফ একবারও যোগাযোগ করেনি।”
শুধু সিনিয়র নয়, অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দলের শিবিরের জন্যও খেলোয়াড় ছাড়তে নারাজ মোহনবাগান। দীপেন্দু বিশ্বাস, সুহাইল ভাট, প্রিয়াংশ দুবে ও অভিষেক সিংকে ছাড়বে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কর্তারা। শুভাশীষ বসুর অনুপস্থিতিতে অভিষেককে রক্ষণের ভরসা হিসেবে দেখছে ক্লাব।
অন্যদিকে, ফেডারেশন ইতিমধ্যেই জামশেদপুর এফসি-কে ধন্যবাদ জানিয়েছে, কারণ তারা কোচ খালিদ জামিলকে জাতীয় দায়িত্ব পালনে ছাড় দিয়েছে। এআইএফএফ সব ক্লাবের কাছে সহযোগিতা চাইলেও মোহনবাগানের কড়া অবস্থান স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—ফুটবলারদের সুরক্ষা আর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা নিয়েই এখন তাদের অগ্রাধিকার।
মোহনবাগান এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টুর্নামেন্টে ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর আহাল এফসির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর তাদের সামনে থাকবে ইরানের সেপাহান এবং জর্ডানের আল হুসেইন। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে গ্রুপ পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো অপেক্ষা করছে সবুজ-মেরুনের জন্য।