গ্রেপ্তার হওয়া মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ সংক্রান্ত বিল আনছে সরকার, পাল্টা রণকৌশল সাজাতে বৈঠকে INDIA শিবির
গ্রেপ্তার হওয়া জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ সংক্রান্ত নতুন বিল আনছে মোদী সরকার।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:০৭: গ্রেপ্তার হওয়া জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ সংক্রান্ত নতুন বিল আনছে মোদী সরকার। আজ, বুধবার সংসদে পেশ হবে এই সংক্রান্ত তিন বিল। দেশের প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মন্ত্রীদের উপর কার্যকর হবে এই বিল। যার ফলে, গ্রেপ্তার হলে যেকোনও কাউকে প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারিত করা যাবে। দোষী প্রমাণিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। অমিত শাহের দপ্তর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লোকসভার সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে সংবিধানের ১৩০তম সংশোধন করা হবে। নতুন বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কোনও মন্ত্রী যদি গ্রেপ্তার হন এবং একটানা ত্রিশ দিন হেপাজতে থাকেন, ৩১তম দিনে তাঁকে হয় পদত্যাগ করতে হবে, নতুবা পদ থেকে সরানো হবে। নতুন বিল অনুযায়ী, কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট গভর্নরই নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে পদ থেকে সরাতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীকে সরানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। কোন ধরনের অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়ার ক্ষেত্রে এ জিনিস প্রযোজ্য তা বলা হয়নি স্পষ্ট করে। মনে করা হচ্ছে যে অপরাধে অন্তত পাঁচ বছরের কারাবাস হতে পারে, তেমন মামলার কথাই বলা হচ্ছে। খুন থেকে আর্থিক দুর্নীতিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে ধরা হতে পারে। আজ বুধবার সকাল দশটা বৈঠক বসছে বিরোধী শিবির।
উল্লেখ্য, কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত না-হওয়া অবধি জনপ্রতিনিধিকে অপসারণের নিয়ম ছিল না। নতুন নিয়ম আনতে হলে সংবিধানের ৭৫, ১৬৪ এবং ২৩৯এ ধারা সংশোধন করতে হবে।
সূত্রের খবর, নতুন বিল তিনটি পাসের ক্ষেত্রে বিরোধীদের ভূমিকা কী হবে, কী ভাবে তাঁরা লড়বেন সংসদে, তা ঠিক করতেই আজ আলোচনায় বসেন ইন্ডিয়া জোটের শরিকেরা। বিরোধী শিবিরের মতে, ভোট চুরির মতো ইস্যু থেকে নজর ঘোরাতেই সরকার এই বিল আনছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার উপ-দলনেত্রী সাগরিকা ঘোষ, X হ্যান্ডেলে লেখেন,”যখন ভাববেন মোদী-শাহ জুটি সংবিধানের আর বেশি ক্ষতি করতে পারবে না, তাঁরা ঠিক তখনই তাই করবে। বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার মাত্র দুই দিন আগে মোদী সরকার একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনছে। যার মাধ্যমে চার্জশিট ছাড়া, দোষী সাব্যস্ত না-হওয়া সত্ত্বেও যেকোনও মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণের অসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র।”
তিনি আরও লিখছেন, “গত এক দশকে মোদীর ট্র্যাক রেকর্ড অনুসারে, বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের লক্ষ্য করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির আরও ব্যাপক হারে অপব্যবহারের দরজা খুলে দিয়েছে। নয়া বিল মোদী-শাহ জুটির ‘Electoral AUTOCRACY’র মডেলকেই ইঙ্গিত করে।” বলাবাহুল্য, এই বিলকে কেন্দ্র করে বাদল অধিবেশনের শেষ দুদিনে উত্তাল হতে চলেছে সংসদ।