‘মিশন সুদর্শন চক্র’-র প্রথম সাফল্য, আরও শক্তিশালী হল ভারতীয় সুরক্ষাকবচ
DRDO জানাচ্ছে, বহুস্তরীয় এই ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স ওয়েপন সিস্টেম শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন হামলা প্রতিরোধে সক্ষম

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১১:৩০: স্বাধীনতা দিবসের ঘোষণার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় বড় সাফল্য পেল ভারত। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘মিশন সুদর্শন চক্র’-র প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। ২৩ আগস্ট ওড়িশার চাঁদিপুর উপকূলের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জে এই পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) জানাচ্ছে, বহুস্তরীয় এই ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স ওয়েপন সিস্টেম (IADWS) শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন হামলা প্রতিরোধে সক্ষম। ইজরায়েলের বিখ্যাত আয়রন ডোমের ধাঁচেই তৈরি এই দেশীয় প্রযুক্তি ভারতের আকাশকে আরও নিরাপদ রাখবে।
কিউআরএসএএম (QRSAM): ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল ক্ষেপণাস্ত্র, যা আকাশে শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র বা যুদ্ধবিমান ধ্বংস করতে পারে।
ভিএসএইচওআরএডিএস (VSHORADS): নিচু দিয়ে উড়ে আসা ড্রোন বা হেলিকপ্টারকে সেকেন্ডের মধ্যে শনাক্ত করে ভূপাতিত করতে সক্ষম। হালকা হওয়ায় এটি কাঁধেও বহনযোগ্য।
ডিইডব্লিউ (DEW): লেজার বা মাইক্রোওয়েভ ভিত্তিক অ-প্রথাগত অস্ত্র, যা বিস্ফোরক ছাড়াই আকাশেই ধ্বংস করতে পারে শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট কিংবা ড্রোন। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সূর্য’।
ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ৩০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ‘সূর্য’ আগামী দিনে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভারতের আকাশকে সুরক্ষা দিতে পারবে।
এর আগেও ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন পাকিস্তানি আক্রমণ প্রতিহত করতে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সাফল্য দেখিয়েছে। বর্তমানে ভারতীয় সেনার হাতে রাশিয়া থেকে কেনা ‘এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ’ আছে। পাশাপাশি দেশীয় প্রযুক্তিতে ‘প্রজেক্ট কুশ’-এর কাজও এগোচ্ছে। সফল হলে, ভারত নিজস্ব ‘এস-৪০০’ সমতুল্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাবে।
গত বছর ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড সেনার হাতে তুলে দিয়েছিল ‘আকাশতির’, যা মূলত ইজরায়েলি আয়রন ডোমের মতো স্বল্পপাল্লার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে তৈরি। তারই উন্নত সংস্করণ ভিএসএইচওআরএডিএস এবার পরীক্ষায় সফল।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাফল্য ভারতের নিরাপত্তা বলয়কে আরও শক্তিশালী করবে। সীমান্তে শত্রু আক্রমণ ঠেকাতে যেমন কাজে লাগবে, তেমনই কৌশলগত ও বেসামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলিকেও সুরক্ষা দেবে।
‘মিশন সুদর্শন চক্র’-র প্রথম সাফল্যকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই প্রতিরক্ষা বলয় কার্যকর হলে, ভারতের আকাশ আরও নিশ্ছিদ্র হয়ে উঠবে।