শৈলেন মান্না – বাঙালির গর্ব, ভারতের চিরকালীন ফুটবল প্রবাদ
কলকাতা ময়দানের ‘মান্নাদা’- নামেই যাঁর পরিচয়। ১৯২৪ সালের ১লা সেপ্টেম্বর জন্মেছিলেন তিনি।
Authored By:
দেবাশিস সেনগুপ্ত

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৩৯: কলকাতা ময়দানের ‘মান্নাদা’- নামেই যাঁর পরিচয়। ১৯২৪ সালের ১লা সেপ্টেম্বর জন্মেছিলেন তিনি। আজ কিংবদন্তি ফুটবলার শৈলেন মান্নার ১০২তম জন্মদিন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পা রেখেছিলেন ক্লাব ফুটবলে। দু’বছর হাওড়া ইউনিয়নে খেলার পর যোগ দেন মোহনবাগানে। সেখানেই টানা ১৯ বছর খেলেছেন, গড়েছেন এক অনন্য ইতিহাস।
১৯৪৮ সালে লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন শৈলেন মান্না (Sailen Manna)। ১৯৫০ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার সুযোগ পায় ভারত। মান্নাদাও ছিলেন সেই দলে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মুম্বই থেকে ফিরিয়ে আনা হয় ভারতীয় দলকে। আজীবন বুকের ভেতর কাঁটা হয়ে ছিল সেই আক্ষেপ। আরেক বেদনা ছিল ১৯৪৮ অলিম্পিকেই, ফ্রান্সের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস আর দ্বিতীয়বার পেনাল্টি পেয়েও নিজে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
১৯৫১ সালে দিল্লির এশিয়ান গেমসে তাঁর অধিনায়কত্বেই সোনার পদক জেতে ভারত। ১৯৫২ হেলসিঙ্কি অলিম্পিক, ১৯৫৪ ম্যানিলা এশিয়ান গেমস, কিংবা কোয়াড্রাঙ্গুলার – ভারতীয় দলকে বারবার নেতৃত্ব দিয়েছেন মান্নাদা। ১৯৫২-৫৩ থেকে ১৯৫৫-৫৬- টানা চারবার কোয়াড্রাঙ্গুলার জয়ের কৃতিত্বও তাঁর নেতৃত্বের।
১৯৫৩ সালে ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ইয়ারবুকে বিশ্বের সেরা ১০ জন ফুটবল অধিনায়কের মধ্যে নাম ওঠে শৈলেন মান্নার। এরপর আসে সম্মাননা- ১৯৭১ সালে ‘পদ্মশ্রী’, ২০০০ সালে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের ‘সহস্রাব্দের সেরা ফুটবলার’, ২০০১ সালে ‘মোহনবাগান রত্ন’। কিন্তু সময়ের উদাসীনতায় আজ অনেকটাই আড়ালে চাপা পড়ে যায় সেই গর্বের দিনগুলি।
খেলা ছেড়ে দিলেও মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি তাঁর। দীর্ঘদিন মোহনবাগানের প্রশাসকের দায়িত্বে থেকেছেন । জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছে বিধাননগরে। ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ৮৮ বছর বয়সে সেখানেই প্রয়াত হন এই প্রবাদপ্রতিম ফুটবলার।
আজকের দিনে, বিস্মৃতির অতল থেকে তাঁর স্মৃতি তুলে এনে প্রণাম জানাই – শুভ জন্মদিন, ভারতের চিরকালীন ফুটবল প্রবাদ শৈলেন মান্না।