সেপ্টেম্বরেই মোদীর মণিপুর সফরের পরিকল্পনা! বিরোধীদের চাপ-কটাক্ষেই কি টনক নড়ল?
প্রায় আড়াই বছর ধরে অশান্ত মণিপুর। কুকি-মেতেই সংঘাতে প্রাণহানি অগণিত, ঘরছাড়া অসংখ্য মানুষ।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:২৫: প্রায় আড়াই বছর ধরে অশান্ত মণিপুর। কুকি-মেতেই সংঘাতে প্রাণহানি অগণিত, ঘরছাড়া অসংখ্য মানুষ। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও দফায় দফায় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। এই আবহেই সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) মণিপুর সফরে যেতে পারেন বলে খবর। যদিও সরকারি ভাবে এখনও কিছু ঘোষণা হয়নি, সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে এমন ইঙ্গিত মিলেছে।
দু’বছর ধরে গোষ্ঠী-সংঘর্ষে বিধ্বস্ত মণিপুরে (Manipur) এখন রাষ্ট্রপতি শাসন কার্যকর। ২০২৩ সালের মে মাসে জাতিগত সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে বিরোধীরা বারবার দাবি তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যেন সরাসরি রাজ্যে গিয়ে পরিস্থিতি বুঝে আসেন। কিন্তু এতদিন তা হয়নি। এ সময় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারবার বক্তব্য রাখলেও প্রধানমন্ত্রী কার্যত নীরবই থেকেছেন। অন্যদিকে, রাহুল গান্ধী একাধিকবার মণিপুর সফর করে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, যা সরকারের উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে।
বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন তুলছে, মণিপুরের চলমান অশান্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেন নীরব? কেন এখনও পর্যন্ত তিনি রাজ্যে যাননি? মোদীর সর্বশেষ মণিপুর সফর ছিল ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি। তার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ছয় বছর।২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি পা রাখেননি। এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও তিনি বৈঠকে বসেননি।
২০২৪ সালের ৩ জুলাই রাজ্যসভায় মাত্র দু’মিনিট বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি দাবি করেন, মণিপুরে হিংসা ধীরে ধীরে কমছে এবং শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় সরকার ধারাবাহিক উদ্যোগ নিচ্ছে। কিন্তু সেই বক্তব্যের পরও সময় গড়িয়েছে, পরিস্থিতি জটিলই রয়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতেই মোদীর ভ্রমণসূচি নিয়ে সরব হয়েছিল তৃণমূল (TMC)। রাজ্যসভায় তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ব্যঙ্গের ছলে প্রশ্ন তুলেছিলেন, “৩.৮ লক্ষ কিমি: ২০২২ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদির দেশ-বিদেশ সফরের মোট দূরত্ব। ৩.৮ লক্ষ কিমি: পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বও প্রায় এতটাই! তবু তিনি মণিপুরে গেলেন না।” একই সঙ্গে সংসদীয় প্রক্রিয়াও নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আর সংসদে মণিপুর নিয়ে আলোচনা হল ভোররাত ৪টেয়, এর আসল কারণটাই বা কী?”
গত জুলাইয়েও প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য মণিপুর সফর নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। আবারও তাঁর সফর ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে এবার আদৌ তিনি মণিপুরে যাবেন কি না, সেই উত্তর এখনও অজানা।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, বিরোধীদের এই লাগাতার চাপ ও কটাক্ষই হয়তো প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের পেছনে কাজ করতে পারে। এখন অপেক্ষা, তাঁর উপস্থিতি উত্তর-পূর্বের জ্বলন্ত পরিস্থিতিতে বাস্তবে কোনও স্বস্তি এনে দিতে পারে কি না।