বাংলায় স্কুলছুটের হার এখন শূন্য: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাংলায় আগের থেকে অনেক কমেছে স্কুলছুটের সংখ্যা। শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে একথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:২৩: বাংলায় আগের থেকে অনেক কমেছে স্কুলছুটের সংখ্যা। শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার কলকাতার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে একথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য শিক্ষারত্ন সম্মানের পাশাপাশি, ২০২৫ সালের কৃতী পড়ুয়াদেরও সংবর্ধনা দেওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।সেরা বিদ্যালয়গুলিকেও সম্মাননা প্রদান করা হয় এই অনুষ্ঠানে।
এর পাশাপাশি এদিন এসএসসি’র চাকরিহারাদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদের নাম অযোগ্যদের তালিকায় তাদের জন্য নতুন চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার।
কারা পেলেন সম্মাননা:
মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা-সহ বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষায় এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম হওয়া ১৯ জন ছাত্রছাত্রী
সমস্ত বোর্ড মিলিয়ে ৩৮৭জন কৃতী ছাত্রছাত্রী পুরস্কৃত হয়েছে
তাদের দেওয়া হয়েছে মানপত্র , ট্যাব, ল্যাপটপ, জেমস অফ বেঙ্গল নামে একটি বই, মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষর করা ডায়েরি এবং ১২টি বই।
শিক্ষারত্ন পেলেন মোট ৭৩ জন শিক্ষক। এদের মধ্যে ৩৯ জন স্কুলের শিক্ষকশিক্ষিকা, ২১ জন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ১৩ জন ভোকেশনাল এবং অন্যান্য আইআইটি বিষয়ক শিক্ষক। সকলকে মানপত্র, শাল, ঘড়ি, স্মারক, বই এবং ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা ও খেলাধূলায় উৎকর্ষের জন্য পুরস্কার পেয়েছে সেরা ১২টি স্কুল
অনুষ্ঠান শেষে বক্তৃতা রাখার সময় সকলকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় ড্রপআউট রেট কমেছে। আগে স্কুলছুটের হার খুব বেশি ছিল। কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, মেধাশ্রী ইত্যাদি নানা প্রকল্পের পর শিক্ষায় স্কুলছুটের সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে।’’
তাঁর কথায় মেয়েদের অগ্রগতির ক্ষেত্রেও ভারতকে পথ দেখিয়েছে বাংলা – “এককালে ছোট মেয়েদের খুব অল্প বয়সে বয়স্কদের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। বিদ্যাসাগর বাল্যবিবাহ রদ করেছিলেন। এই বাংলার অ্যাসেম্বলি থেকেই একদিন সতীদাহ প্রথা রদ বিলও পাশ হয়েছিল। তার পর তা গোটা ভারতে গৃহীত হয়। অর্থাৎ পথ দেখিয়েছিল বাংলাই। এগুলো আমাদের গর্বের জায়গা। আমরা যেন আমাদের অস্তিত্ব ভুলে না যাই।’’
এসএসসি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “১০ বছর শিক্ষক হিসাবে কাজ করার পরেও যাদের আজ অযোগ্য বলা হয়েছে, আমরা তাঁদের নিয়ে আইনত আলোচনা করছি। আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী হয়তো তাঁরা আর শিক্ষক হতে পারবেন না, কিন্তু তাঁরা যাতে অন্তত গ্রুপ সি-র চাকরি পান, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। তাঁদের হতাশ হতে বারণ করব। কারণ, আমাদের সরকার মানবিক সরকার। আমরা রাজনীতি দেখে কাজ করি না, মানুষের কথা ভেবে কাজ করি। আজ শিক্ষকদিবসের প্রাক্কালে সব শিক্ষকদের অন্তরের অন্তস্তল থেকে শুভকামনা জানাচ্ছি।’’
নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রাজ্যে শিক্ষক পদে এখনও মোট ৫৬ হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এরমধ্যে ৩৫,৭২৬টি পদের জন্য বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। আরও ২১ হাজার পদ এখনও খালি রয়েছে। আমরা নিয়োগ করতে চাই, কিন্তু আইনের জটিলতার কারণে তা হচ্ছে না। যারা আইনকে বেলাইন করে দিয়েছেন, তাদের জন্য এই অবস্থা। আমি আদালতকে দোষ দেব না। আমাদেরই মধ্যে কিছু কিছু লোক আছে, তাদের জন্যই এমন হচ্ছে। কত লোকের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল। যারা চাকরি করতেন, যারা ‘আনটেন্টেড’, তাদের জন্য আমরা ইতিমধ্যেই ভাবনা শুরু করেছি। তাদের কথা ভেবেই বয়সসীমা বৃদ্ধির কথা ভাবা হয়েছে। আমাদের হাত-পা বাঁধা। কিন্তু আমরা তাদের সুযোগ দিচ্ছি, যাতে তারা পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে ফিরতে পারেন।’’