ভাবা অ্যাটমিকের সাথে গাঁটছড়া বাঁধল বাংলার আম

প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে ‘গামা রে’-এর মাধ্যমে আমগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ সারবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তর

October 4, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রসে টইটুম্বুর হিমসাগরই হোক, বা ঘ্রাণে ভরা সোনালি ল্যাংড়া— বাংলার আমকে স্বাদে-গন্ধে টেক্কা দিতে পারে, এমন জিনিস আর কই? গোটা বিশ্বকে বাংলার আমের স্বাদ চেনাতে এবার উঠে পড়ে লাগছে রাজ্য সরকার। রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টায় তারা এবার ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে। আমেরিকা সহ প্রথম বিশ্বের বাজার ধরতে এবার থেকে বাংলার আমকে একরকম ‘অগ্নিপরীক্ষা’ দিতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে ‘গামা রে’-এর মাধ্যমে আমগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ সারবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তর। হুগলিতে তার পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।


খাবার-দাবারে জীবাণু নিয়ে বরাবরই উন্নত দেশগুলির খুঁতখুঁতানি বেশি। বিশেষত আমেরিকায় ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে শুচিবায়ুগ্রস্ততার কারণেই বহু খাদ্যদ্রব্যের রপ্তানির বাজার মার খায়। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের আমকে বিশ্ব-বাজারে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল আগে থেকেই। টার্গেটে ছিল আমেরিকার বাজারও। তাই আমের গা থেকে সমস্ত জীবাণু দূর করার জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি করে রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতে কাজের কাজ খুব একটা হয়নি। গামা রে- এর মাধ্যমে আমকে জীবাণুমুক্ত করার ক্ষেত্রে তাই তারা ভাবা অ্যাটমিকের দ্বারস্থ হয়।

এ রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দপ্তরের মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা বলেন, আমরা হুগলির চুঁচুড়ায় এই সংক্রান্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলেছি। করোনা সংক্রমণের কারণেই গতি পাচ্ছে না এই কাজ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই রাজ্য সরকার এ নিয়ে আদাজল খেয়ে লাগবে। মন্ত্রী বলেন, আমরা যেমন হিমসাগর, ল্যাংড়ার মতো পরিচিত আমের ফলন বাড়াচ্ছি, তেমনই জোর দিচ্ছি আম্রপালির উপর। এই আম খেতে সুস্বাদু, এর ফলনও ভালো। যাঁরা এই আমের চাষ করবেন, তাঁদের লাভের অঙ্কও বাড়বে। তাছাড়া আম্রপালির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, অন্যান্য আমের ফলন যেমন এক বছর অন্তর হয়, এখানে তেমন নয়। ফি বছরই ভালো আম পাওয়া যায়। আমাদের লক্ষ্য, আম্রপালির হাত ধরে বিদেশের বাজার ধরা।


বাংলার আম যেটুকু রপ্তানি হয়, তা মূলত আরব ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা পূর্ব ভারতে আমের জীবাণুনাশক পরিকাঠামো না থাকায় আমেরিকার বাজার মেলে না। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলি বাংলা থেকে আম নিয়ে গিয়ে গামা রে-এর মাধ্যমে সেগুলি জীবাণুমুক্ত করে রপ্তানি করে। পরিকাঠামোর অভাবে বঞ্চিত হন এরাজ্যের চাষিরা। এবার সেই খরা কাটাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।


খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের কর্তারা বলছেন, আমকে সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত করতে গামা রে হল সবচেয়ে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পন্থা। এতে আমের জীবাণু মারতে গিয়ে স্বাদ ও গন্ধের সঙ্গে আপস করতে হয় না। তবে এই পরিকাঠামো সম্পূর্ণ হলে শুধু আম নয়, অন্যান্য ফলের রপ্তানিও বাড়বে। বাংলার পানের কদরও বিশ্ব বাজারে বেশ ভালো। সেই বাজার আরও বেশি করে ধরা যাবে, বলছেন দপ্তরের কর্তারা। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen