মুকুলের ঘটা করে সংবর্ধনা, জানতেনই না দিলীপ
সদ্য বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি হওয়া মুকুল রায় এবং রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে কলকাতার আইসিসিআর-এ রবিবার ঘটা করে সংবর্ধনা দিল দলেরই একাংশ। অনুষ্ঠান ভরে রইল মুকুলবাবুর ভূয়সী প্রশংসায়। কিন্তু ওই অনুষ্ঠানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতি তো দূরের কথা, তাঁর নামও উচ্চারিত হল না। শুধু এক বার মুকুলবাবুর মুখে তাঁর নাম শোনা গেল। ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে দিলীপ-শিবিরের ‘সখ্য’ কার্যত আনুষ্ঠানিক। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল অনেকটা সেই ছকেই।
দিলীপবাবু এ দিন দলীয় কর্মসূচিতে তমলুক, ময়না এবং কেশিয়াড়িতে ছিলেন। আইসিসিআর-এর ওই অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘মুকুলদা নতুন পদাধিকারী হয়েছেন বলে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ভাল।’’ ওই অনুষ্ঠানে কি তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘না, আমি জানতাম না। আর সব জায়গায় আমাকে যেতে হবে, এরও কোনও মানে নেই। আমি মেদিনীপুরে দলের কাজে আছি। ৬ তারিখ পর্যন্ত কলকাতার কোনও কর্মসূচিতে থাকতে পারব না, আগেই সকলকে বলা আছে।’’
সভায় রাজ্য বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, রাজ্য দলের সহ সভানেত্রী ভারতী ঘোষ প্রমুখ ছিলেন। মেনন বক্তৃতায় কারও নাম না করেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেন, ‘‘দলে দায়িত্ব না পেলে ক্ষোভের কিছু নেই। স্টেশনে গিয়ে এক বার ট্রেন মিস হলে রাগ করে বাড়ি চলে গেলে ট্রেন আর পাওয়া যায় না। কারণ ট্রেন কারও বাড়িতে যায় না। কিন্তু স্টেশনে ধৈর্য ধরে বসে থাকলে পরের ট্রেন মেলে। সুতরাং, দায়িত্ব পেয়েছি কি না, না ভেবে ২০২১-এর বিধানসভা ভোট জিততে একসঙ্গে সকলকেই ঝাঁপাতে হবে।’’ অনেকের ধারণা, দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ হারিয়ে ক্ষুব্ধ রাহুল সিংহের প্রতি এটাই দলের বার্তা।
আইসিসিআর-এর সভায় কৈলাস, মেনন, মুকুলবাবু, স্বপনবাবুর বক্তব্যের নির্যাস— ক্ষেত্র প্রস্তুত। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জেতার জন্য চাই বিজেপি কর্মীদের আত্মবিশ্বাস। হাথরস ধর্ষণের বিরুদ্ধে পথে নেমে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপিকে ‘করোনার চেয়েও বড় মহামারি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তার প্রতিক্রিয়ায় কৈলাস এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপিকে শংসাপত্র দেওয়ার অধিকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেই। বিজেপি না মমতাজি, কে কোভিড, তা জনতা ঠিক করবে।’’