তৃণমূলে ফিরতে চেয়েই প্রাণ গেল মণীশের?
অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে হাওড়ার পাঁচলায় বৈঠক সেরে সবে ফিরেছিলেন। টিটাগড়ে নিজের অফিসে ঢুকতে যাবেন, তখনই বাইক থামিয়ে দুই যুবক এসে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে চারটে গুলি। বুকে-মাথায় গুলি নিয়ে নিজের খাসতালুকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লেন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লা। গতকাল সন্ধ্যায় এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। আজ ১২ ঘণ্টার ব্যারাকপুর বনধ ডেকেছিল বিজেপি। এই বনধকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় টিটাগড়, খড়দহ, এমনকী কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল চত্বরও।
কাল মণীশ খুন হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি। কিন্তু টিটাগড়, খড়দহের রাজনৈতিক হাওয়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে অনেক রহস্যময় কাহিনিও। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের আনাচে কানাচে অনেকেই বলছেন, মণীশ শুক্লা খুনের পিছনে থাকলেও থাকতে পারে পুরনো অঙ্ক। শোনা যাচ্ছে, বিজেপির সঙ্গে সম্প্রতি দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন মণীশ, সম্প্রতি ফিরতে চাইছিলেন তৃণমূলে। তাতেই কি রোষের মুখে খুন হতে হলো মণীশকে? উঠছে সম্ভাবনা।
আজ ফিরহাদ হাকিম সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘মণীশের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আজকের নয়। অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু অর্জুন সিং ওকে গুণ্ডা দিয়ে বিজেপি করতে বাধ্য করে। কিন্তু বিজেপিতে আর থাকতে পারছিল না মণীশ। তাই তৃণমূলে ফিরতে চাইছিলেন।’ অর্জুনের দিকেই সন্দেহের আঙুল ঘুরিয়ে দিয়েছেন ফিরহাদ। তিনি আরও বলেন, ‘যে সময় ও পার্টি অফিসে এল, তার আগেই কৈলাস বিজয়বর্গীয় জরুরি ফোন করছিলেন অর্জুনকে। এরপরই কলকাতায় চলে এলেন অর্জুন। কী এমন জরুরি ফোন ছিল? ছোটখাটো নেতাদেরও তো বিজেপি সিআরপিএফ দেয়, মণীশকে দিল না কেন?’
সাধারণত মণীশ শুক্লার সঙ্গে সর্বদাই অন্তত ৭ জন দেহরক্ষী থাকতেন, তার মধ্যে ২ সশস্ত্র। কিন্তু গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় কোনও দেহরক্ষীই কাছে থাকলেন না কেন, উঠছে সেই প্রশ্ন। এমনকী মণীশ শুক্লার ২ সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীই রবিবার থেকে সাতদিনের ছুটি নিয়েছিলেন। এটা কি নেহাতই কাকতালীয়? উঠছে প্রশ্ন। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সিসিটিভি ফুটেজ। ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও, ঠিক ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভাঙা। ইতোমধ্যেই তদন্তভার গিয়েছে সিআইডি’র হাতে। তদন্ত শুরু করেছেন আধিকারিকরা।