পুজোর পাঁচদিন আগেই বিপর্যয়, রাতভর বৃষ্টিতে বানভাসি চেহারা নিয়েছে কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৭:০০: পুজো শুরু হতে আর মাত্র পাঁচ দিন। তার আগে রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা। বানভাসি চেহারা নিয়েছে গোটা শহর। প্রচুর বাড়ির একতলায় জল ঢুকে গিয়েছে। কলকাতা এবং শহরতলির নীচু এলাকাগুলি প্লাবিত। রেললাইনে জল জমে ট্রেন চলাচলও বিপর্যস্ত।
বিভিন্ন এলাকায় পুজোর প্রস্তুতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। কোথাও ভেঙে পড়েছে নির্মীয়মাণ স্টল। কোথাও ভেসে গিয়েছে বিবিধ সরঞ্জাম। অনেকেই বলছেন, স্মরণকালের মধ্যে এমন দুর্যোগ দেখা যায়নি। তুমুল এই বৃষ্টি মেঘভাঙা কিনা, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।
ব্যাহত হয়েছে শিয়ালদহে ট্রেন চলাচল। ভারী বৃষ্টির কারণে রেললাইনে জল জমে অন্য শাখাতেও ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় একাধিক স্কুল তাদের নির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এক টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার যে পরীক্ষা ছিল তা কবে নেওয়া হবে পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে ওই বেসরকারি স্কুলগুলি। এই পরিস্থিতিতে চিন্তায় পুজো কমিটির আয়োজকরাও।
আবহাওয়া যে দুর্যোগপূর্ণ হতে চলেছে, গত দু’দিন ধরেই সেই পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু তা যে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পৌঁছবে, সে বিষয়ে আগাম কোনও আন্দাজ ছিল না। যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা-ও কল্পনাতীত। সোমবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। মধ্য রাতের পরে তার তীব্রতা বাড়ে। টানা প্রায় পাঁচ ঘন্টা ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে। তখনই বিভিন্ন নীচু এলাকায় জল জমতে শুরু করে। নাগরিকদের একাংশের বক্তব্য, পুজোর প্রস্তুতির জন্যত মণ্ডপ তৈরির জিনিসপত্র জমে অনেক এলাকাতেই নিকাশিব্যযবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার উপর ভয়ঙ্কর বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন হয়ে পড়েছে।
সকালের আলো ফোটার পরে বৃষ্টির বেগ কমেছে। কিন্তু বৃষ্টি একেবারে থেমে যায়নি। আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে যে এলাকাগুলি ইতিমধ্যেই বানভাসি, সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পুর-প্রশাসন ভোর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় পাম্প চালিয়ে জল নামানোর চেষ্টা শুরু করেছে। কিন্তু জমা জলের পরিমাণ এত বেশি যে, পাম্প চালিয়েও দ্রুত সে জল নামানোর পরিস্থিতি নেই। সময় লাগবে বলে পুর প্রশাসকেরাই জানাচ্ছেন। ফলে বৃষ্টি একেবারে না থামলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা।
পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনেককেই অতীতের বন্যার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। অনেকেই ১৯৭৮ সালের ভয়াবহ বানভাসি পরিস্থিতির সঙ্গে সোমবার রাতভর বৃষ্টিতে নাজেহাল শহরের তুলনাও করতে শুরু করেছেন।