নোংরা জমা জল থেকে ছড়াতে পারে লেপ্টোস্পাইরোসিস! সতর্ক থাকবেন কী ভাবে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:০৩: রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা ও আশপাশের এলাকা। কোথাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর, আবার কোথাও জমে থাকা নোংরা জলে সংক্রমণের আশঙ্কা। চিকিৎসকদের মতে, বর্ষায় এই সময় বিশেষ করে লেপ্টোস্পাইরোসিস নামক সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।
কেন ভয় লেপ্টোস্পাইরোসিস (Leptospirosis)?
‘লেপ্টোস্পাইরা ইন্টেরোগ্যানস’ নামের ব্যাক্টেরিয়া থেকেই এই রোগ হয়। কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর বা ছুঁচো জাতীয় প্রাণীর মল-মূত্র জমা জলে মিশে যায়। তার থেকেই সংক্রমণ ঘটে মানুষের শরীরে। সাধারণত খালি পায়ে জমা জল পার হওয়া বা শরীরের কাটাছেঁড়া অংশ দিয়ে এই ব্যাক্টেরিয়া প্রবেশ করে। রোগটি পরিচিত না হওয়ায় অনেক সময় ধরা পড়তেও দেরি হয়।
কী কী উপসর্গ দেখা দেয়?
প্রথমে জ্বর, মাথা ও শরীর ব্যথা, হাত-পায়ে যন্ত্রণা দেখা দেয়। দ্রুত রোগ ধরা না পড়লে লিভার-কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। রক্তক্ষরণ, ফুসফুসে সংক্রমণ, এমনকি মেনিনজাইটিসের উপসর্গও দেখা দিতে পারে। গুরুতর অবস্থায় খিঁচুনিও হতে পারে।
- সতর্ক থাকার উপায়
- জমা জলে খালি পায়ে হাঁটবেন না।
- বাইরে থেকে ফিরেই সাবান দিয়ে হাত-পা ধুয়ে নিন, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করুন।
- ভেজা বা অপরিষ্কার পোশাক ঘরে ফেলে রাখবেন না, সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে ফেলুন।
- রাস্তায় বিক্রি হওয়া শরবত, নরম পানীয় বা কাটা ফল খাবেন না।
- দীর্ঘ সময় ভেজা জুতো পায়ে রাখবেন না।
- জল ফুটিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, লেপ্টোস্পাইরোসিসের চিকিৎসা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে হয়। তবে নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক। জ্বর কমছে না, ঘন ঘন বমি, নাক-মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ বা খিঁচুনি দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
বর্ষার সময়ে জমা জল এড়িয়ে চলা, খালি পায়ে রাস্তায় না হাঁটা এবং ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই লেপ্টোস্পাইরোসিস থেকে বাঁচার প্রধান উপায়। সচেতন থাকলেই এই প্রাণঘাতী সংক্রমণকে অনেকটাই রোখা সম্ভব। তাই সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন।