পাখির চোখ ২০২৬! একদা ‘কংগ্রেসের গড়’ তিন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলার জন্য বিশেষ স্ট্রাটেজি তৃণমূলের

September 25, 2025 | 2 min read
Published by: Ritam

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:৩০: বছর ঘুরলেই বাংলার বিধানসভা নির্বাচন। নিজেদের মতো করে ভোট প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে, তিন জেলা মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর দিনাজপুরে ‘বিশেষ নজর’ দিতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। একদা এই তিন জেলাই কংগ্রেসের ‘গড়’ হিসাবে পরিচিত ছিল। বাম আমলেও এই জেলাগুলিতে দাপট দেখাত কংগ্রেস। তবে বিগত এক দশকে কংগ্রেস তাদের শক্তি হারিয়েছে। অন্যদিকে, জমি মজবুত করেছে তৃণমূল।

তিন জেলায় অনেক মিল আছে। তিন জেলাতেই ধর্মীয় মেরুকরণের আবহ আছে। শাসকের সংগঠনে গোষ্ঠীকোন্দল আছে, যেটা অন্য জেলায় কম। এই তিন জেলাকে টার্গেট করেছে বাম, কংগ্রেস। যদি খাতা খোলা যায়।বিধানসভা ভোটের জন্য সংগঠনকে সাজাচ্ছে তৃণমূল। ব্লকস্তরের রদবদল শুরু হয়েছে। ব্লকস্তরের সাম্প্রতিক রদবদলে মুর্শিদাবাদের ছবি শাসক তৃণমূলের জন্য সুখের নয়। দলের অন্দরের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Abhishek Banerjee) রদবদলের প্রক্রিয়ায় মুখ্য। তাঁর মতেই অনুমোদন দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাবধানী পথ নিচ্ছে তৃণমূল।

সাংগঠনিকভাবে মুর্শিদাবাদকে দু’টি ভাগে ভেঙে দল পরিচালনা করে তৃণমূল। বহরমপুর এবং জঙ্গিপুর। শনিবার ন’টি জেলার রদবদল করেছে তৃণমূল। তার মধ্যে মুর্শিদাবাদের দুই সাংগঠনিক জেলাও রয়েছে। বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার ভরতপুরের দু’টি ব্লকে দলের মূল সংগঠন ও যুব, মহিলা এবং শ্রমিকের মতো শাখা সংগঠনের সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেনি তৃণমূল। জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত সাগরদিঘিতে মূল দলের সংগঠনে কাউকে সভাপতি করা হয়নি। কোর কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। লালগোলার ক্ষেত্রেও তাই। জেলা সংগঠনে গোষ্ঠীকোন্দল সামাল দিতে এর আগে বীরভূমে কোর কমিটি গড়েছে তৃণমূল। উত্তর কলকাতাকেও কোর কমিটি গড়া হয়েছে।

২০২৩ সালে উপনির্বাচনে সাগরদিঘিতে ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। ব্লকস্তরের গোষ্ঠীকোন্দল ছিল কারণ। আজও কি তা দমেনি? তাই কি কাউকে সভাপতি না-করে কোর কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। আহ্বায়ক করা হয়েছে বিধায়ক বাইরনকে। লালগোলার কোর কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রুমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেখানে বিধায়ক নেই। ভরতপুরের দু’টি ব্লকে মূল দলীয় সংগঠনের পাশাপাশি শাখা সংগঠনের সভাপতিদেরও নাম ঘোষণা করা হয়নি।

মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরেও শাসকদলের সংগঠনে সমস্যা আছে। ২০১৯ সালে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ লোকসভায় বিজেপি জয়ী হয়েছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ন’টি বিধানসভার মধ্যে সাতটিতে তৃণমূল জয় পায়। ২০২৪ সালে বিজেপি ফের লোকসভায় জেতে। সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে রায়গঞ্জের ফলাফল নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন অভিষেক। ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে মালদহ উত্তর লোকসভা জেতে বিজেপি। মালদহ দক্ষিণ কংগ্রেস। ২০২১-র বিধানসভা ভোটে জেলার ১২টির মধ্যে আটটি জেতে তৃণমূল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে মালদহের দু’টি আসনে হারে তারা। মালদহে তৃণমূলে গোষ্ঠীকোন্দল খুনোখুনি পর্যন্ত গড়িয়েছে। গোষ্ঠীকোন্দল দ্রুত মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ নেতারা। মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরের ব্লক স্তরের রদবদলের ঘোষণা এখনও করেনি তৃণমূল।

গোটা রাজ্যের নিরিখে এই তিন জেলার পরিস্থিতি আলাদা। তিন জেলার সংখ্যালঘুদের সমর্থন চট করে পায়নি তৃণমূল। ২০১৬-র বিধানসভা ভোট পর্যন্ত এই তিন জেলার সংখ্যালঘুদের বৃহৎ অংশের সমর্থন বাম-কংগ্রেসের পক্ষে ছিল। ২০২১ সালে তিন জেলার সংখ্যালঘুদের সমর্থন যায় তৃণমূলের ভোট বাক্সে। ২০২৪-র পর তিন জেলাতেই ভোট ভাল জায়গায় রয়েছে বিজেপি। সব দিক মেপে, বুঝে পা ফেলছে তৃণমূল। কারণ ক্যালেন্ডার বদলালেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen