গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত বঙ্গ BJP-র পর্যবেক্ষক হলেন ভুপেন্দ্র যাদব ও বিপ্লব দেব, রোগ কি আদৌ সারবে? প্রশ্ন দলের অন্দরেই

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৫০: ২০২৬ সালের বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। মাত্র ৭-৮ মাস বাকি ভোটের, আর পুজোর পর থেকেই শুরু হবে জোরকদমে প্রচার। এই প্রেক্ষাপটে গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বড়সড় পদক্ষেপ নিল।
রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ভুপেন্দ্র যাদব, যিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ঘনিষ্ঠ। তাঁর সঙ্গে সহ-পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। বাংলাভাষী বিপ্লববাবু বাংলার রাজনৈতিক আবহ ভালোই বোঝেন এবং পূর্বে হরিয়ানায় পর্যবেক্ষক হিসেবে সফল হয়েছেন।
সম্প্রতি বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে এসেছেন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি অতি হিন্দুত্বের ধারা থেকে সরে এসে দলকে ‘বাঙালির দল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। তবে গোষ্ঠীকোন্দল, পুরনো নেতাদের উপেক্ষা এবং মাঠের রাজনীতিতে কর্মীদের অনুপস্থিতি এখনও বড় সমস্যা। তৃণমূল ইতিমধ্যেই বাঙালি অস্মিতা ও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ইস্যুতে প্রচার শুরু করেছে, যেখানে বিজেপি এখনও দিশাহীন।
এই পরিস্থিতিতে ভুপেন্দ্র যাদবের রণকৌশল নির্ধারণের দক্ষতার উপরেই ভরসা রাখছে বিজেপি। তাঁর নেতৃত্বে দলকে সুসংগঠিত করে মাঠে নামানোই এখন মূল লক্ষ্য।
তৃণমূল কটাক্ষ করে বলেছে, “বিজেপি নিজেই বিপ্লব দেবকে ত্রিপুরাতে ব্যর্থ হলে মনে করছে। সেকারণেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাঁকেই আবার বাংলার পর্যবেক্ষক করা হল। এটা বিজেপিরই সাংগঠনিক ব্যর্থতা। বাংলার মানুষ এর জবাব ভোটের বাক্সে দেবেন। বিজেপির পচা রাজনীতি বাংলার মানুষ ফের বর্জন করবে।” বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির এই রদবদল ও পর্যবেক্ষক নিয়োগ কতটা কার্যকর হয়, তা সময়ই বলবে।
উল্লেখ্য, বিপ্লব দেব ২০১৮ সালের ৯ মার্চ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। শপথের পর থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন-পৌরাণিক যুগে ইন্টারনেট, গৌতম বুদ্ধের সাগর পার, মুঘলদের সংস্কৃতি ধ্বংসের চেষ্টা, এমনকি সিভিল সার্ভিস নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যও করেন। ২০২০-২১ সালে ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। ২০২২ সালের মে মাসে দিল্লির নির্দেশে তিনি মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়েন। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও প্রশাসনিক অচলাবস্থাই ছিল ইস্তফার পেছনে মূল কারণ বলে মনে করা হয়।