দশমীর দিন বিদায়ের শোকের মাঝেও কেন বলা হয় ‘শুভ বিজয়া’?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:২৫: দশমীর দিন বাঙালির ঘরে ঘরে ঘোরে একটাই কথা -‘শুভ বিজয়া’। প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে, ঢাক-শঙ্খের গর্জন আর ভেজা চোখের ভিড়ের মধ্যে আমরা একে অপরকে জানাই এই শুভেচ্ছা। তবু প্রশ্ন জাগে, বিদায়ের দিনে মনের কষ্ট লুকিয়ে কেন বলা হয় ‘শুভ বিজয়া’?
পুরাণ ও কাব্য মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে নয় দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে দেবী দুর্গা বিজয়ী হন। অশুভের উপর শুভের, অন্ধকারের উপর আলোর এই জয়কেই ‘বিজয়া’ বলা হয়। এছাড়া দুর্গা দশমীতে বাপের বাড়ি ফিরে যান-এই বিদায়ের আবেগও বিজয়ার রঙে মিশেছে।
শ্রীশ্রীচণ্ডীতে উল্লেখ আছে, দেবীর আবির্ভাব আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষ চতুর্দশীতে, আর মহিষাসুরকে বধ করেন শুক্ল দশমীতে। রামায়ণে শুক্ল দশমীই রামের রাবণবধের দিন, যা গোটা দেশে দশেরা হিসেবে পালিত হয়। বাঙালি সংস্কৃতিতে এভাবেই ‘শুভ বিজয়া’ বলা হয়ে উঠেছে।
শুভ বিজয়ার মধ্যে শুধু ধর্মীয় অর্থ নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনও লুকিয়ে থাকে। বড়দের পায়ে হাত দিয়ে আশীর্বাদ নেওয়া, ছোটদের মিষ্টি মুখ করানো, একসঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি-এসবই একধরনের মিলনের প্রতীক। বিদায়ের শোককে আনন্দে রূপান্তরিত করে এই শুভেচ্ছা মানুষকে নতুন কিছু সূচনার বার্তা দেয়, জীবনের অন্ধকার কাটিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার যেন অনন্ত আশ্বাস।