হাথরাস নিয়ে চুপ কেন ধনকর? প্রশ্ন নেটিজেনদের
বাংলার রাজ্যপাল হয়ে এ রাজ্যে আসার পর থেকে বারবারই নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে জগদীপ ধনকরের বিরুদ্ধে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করাই হোক বা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নিত্যদিন টুইট করা বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠানো- রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তৃণমূল-সিপিএম-কংগ্রেসের অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু মণীশ শুক্লার হত্যা ঘিরে রাজ্যপাল যে ভাবে তৎপরতা দেখিয়েছেন, তাতে অনেকেই মনে করছেন, তাঁর ‘অতিসক্রিয়তা’ অতীতের সব নজির ছাপিয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়। হাথরস কাণ্ডের পর যখন অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন চুপ করে রয়েছেন ধনকর, ঠিক তখনই তিনি এ রাজ্যের ধর্ষণ পরিসংখ্যান নিয়ে হাজির হলেন। ভাবটা যেন এমন যে, উত্তরপ্রদেশের দিকে আঙুল তোলা কেন? ধর্ষণ তো এ রাজ্যেও অনেক হয়। যদিও সেই পরিসংখ্যানকে সম্পূর্ণ অসংগতিপূর্ণ দাবি করেছে রাজ্য!
বুধবার টুইটে রাজ্যপাল পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছেন, ‘আগস্টে বাংলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২২৩টি। আর অপহরণের সংখ্যা ৬৩৯। রাজ্যের মহিলাদের ওপরে অপরাধের এই রিপোর্ট অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সব জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ করতে হবে পুলিশ-প্রশাসনকে।’ যদিও রাজ্যপালের সেই তথ্য সরাসরি খণ্ডন করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। সরকারের পক্ষ থেকে পালটা টুইট করে জানানো হয়, ‘রাজ্যপালের তথ্য অসংগতি রয়েছে। রাজ্যপালের তথ্য কোনও সরকারি রিপোর্ট, তথ্য বা ডেটার থেকে সংগ্রহ করা নয়। এই অভিযোগ তাই ভিত্তিহীন। সত্য কিনা তা যাচাই না করেই এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।’ এদিকে রবিবার রাত থেকে ধনকরের অতিসক্রিয়তা আলাদা করে নজরে আসতে শুরু করেছে।
মণীশ শুক্লার খুনের খবর আসতেই টুইট করেন ধনকর। এই হত্যাকাণ্ডকে ‘কাপুরুষোচিত’ আখ্যা দিয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অভিযোগ তুলে ফের সরব হন তিনি। ‘জরুরি ভিত্তিতে আপনার সঙ্গে কথা বলা দরকার’ বলে রাতেই মুখ্যমন্ত্রীকে বার্তা পাঠান। টুইট করে জানান, সোমবার সকালে রাজভবনে তলব করেছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর থেকে সাড়া না-পেয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ট্যুইট করেন তিনি। যদিও স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজি তাঁর ডাকে না গেলেও সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য রাজভবনে গিয়েছিলেন সদ্য মুখ্যসচিবের দায়িত্বভার নেওয়া আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ধনখড় তাঁর কাছেই মনীশ খুন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আবার সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপি মণীশের দেহ নিয়ে রাজভবনে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ তাতে বাধা দিলে রাজ্যপাল স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিজেপি নেতাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন।