উত্তরবঙ্গকে ছন্দে ফেরাতে মরিয়া প্রশাসন, সোমবার যাচ্ছেন মমতা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২৩:০০: নাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। ১২ ঘণ্টায় ২৬১ মিলি বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জায়গায় জায়গায় নেমেছে ধস। এখনও পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ অঞ্চলও। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে উত্তরের পাঁচ জেলায়। জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছে তিস্তা, তোর্সা, মহানন্দা, জলঢাকা সহ উত্তরবঙ্গের নদীগুলি। সোমবারও উত্তরের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা একযোগে কাজ চালাচ্ছেন।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, রবিবার সকাল থেকে নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলার সঙ্গে তিনি এবং মুখ্যসচিব ভারচুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেছেন। দুর্যোগে মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও।
দুধিয়া ব্রিজ ভেঙে পড়ায় শিলিগুড়ি ও মিরিকের মধ্যে মূল সড়কপথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মিরিক-সৌরেনিতে আটকে পড়া পর্যটকদের নল-পটং-লোহাগড় হয়ে শিলিগুড়িতে পাঠানো হচ্ছে। ধসের জেরে বন্ধ শিলিগুড়ি-দার্জিলিং রোহিণী রোড। বিপর্যস্ত হিলকার্ট রোড। পাঙ্খাবাড়ি রোড খোলা, দার্জিলিং থেকে মংপু হয়ে শিলিগুড়ি যাওয়ার রাস্তাও খোলা। যানবাহন চলাচল করছে মিরিক-পশুপতি-ঘুম-কার্শিয়াঙের রাস্তায়। ধসের কারণে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ, যার জেরে বন্ধ শিলিগুড়ি থেকে সিকিম-কালিম্পঙের সরাসরি যোগাযোগ। খোলা রয়েছে লাভা-গরুবাথানের রাস্তা এবং শিলিগুড়ি-কালিম্পঙের পানবু রোড।শতাধিক পর্যটক দার্জিলিং, কালিম্পং থেকে সমতলে নামতে পেরেছেন বলে খবর মিলেছে। পর্যটকদের ফেরাতে স্পেশাল বাস সার্ভিস চালু করেছে পরিবহণ দপ্তর। পাহাড় ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সুরক্ষায় ইতিমধ্যেই প্রশাসন কিছু হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে।
নাগরাকাটা, বানারহাট, ময়নাগুড়ি এবং ধুপগুড়ি, চার থানা এলাকার জলমগ্ন এলাকাগুলি থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বেশ কিছু আশ্রয়কেন্দ্রও খোলা হয়েছে। তাঁদের খাবার এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি জানান, গোরুমারায় দুটি গন্ডার জলঢাকা নদীতে ভেসে গিয়েছিল। এর মধ্যে একটির মৃত্যু হয়েছে। অন্যটি বেঁচে রয়েছে। জলদাপাড়ায় চারটি গন্ডার ভেসে গিয়েছে। এর মধ্যে দুটি উদ্ধার হয়েছে। আরও কোনও বন্যপ্রাণী ভেসে গিয়েছে কী না সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন বলে জানান বনমন্ত্রীও।