আমেরিকার থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে পাকিস্তান, চাপে পড়বে ভারত?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:০০: ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে নিজেদের সামরিক শক্তি বাড়াতে আরও একধাপ এগোলো পাকিস্তান (Pakistan)। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল (AMRAAM) কিনছে ইসলামাবাদ। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বৈঠকের পরই এই তথ্য সামনে এসেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের নথি অনুযায়ী, রেথিয়ন সংস্থার তৈরি AIM-120 অ্যাডভান্সড মিডিয়াম-রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল কেনার চুক্তিতে ইতিমধ্যেই ৪১.৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। একই চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি দেশও যুক্ত আছে। চুক্তি অনুসারে, ২০৩০ সালের মে মাসের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হবে। তবে পাকিস্তান ঠিক কতটি মিসাইল পাচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সঙ্গে সংঘাত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের এই সামরিক ঘনিষ্ঠতা কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে বিরল খনিজসম্পদ নিয়ে একাধিক চুক্তির মাধ্যমে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছে ইসলামাবাদ। সম্প্রতি পাকিস্তান সেই খনিজের প্রথম চালান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
নয়াদিল্লির (New Delhi) কূটনৈতিক মহলে এই পদক্ষেপকে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। ভারতের সামরিক আধিপত্যের মোকাবিলায় আমেরিকার ছত্রছায়ায় শক্তি বাড়াচ্ছে পাকিস্তান- এমন আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে।
অন্যদিকে, সামরিক শক্তি বৃদ্ধির দৌড়ে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। সূত্রের খবর, প্রায় ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তিতে চিনের কাছ থেকে ২০টি J-10CE যুদ্ধবিমান কিনতে চলেছে ঢাকা। ওই চুক্তিতে যুদ্ধবিমান ছাড়াও পাইলট প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে বিমানগুলো বাংলাদেশ বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্ত হবে বলে জানা গেছে।
যেখানে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির আগ্রাসী মনোভাব ক্রমশ বাড়ছে, সেখানে নয়াদিল্লিও হাত গুটিয়ে বসে নেই। ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তি আরও মজবুত করতে সক্রিয়ভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্র। এই প্রেক্ষিতে রাশিয়া ভারতের বায়ুসেনার জন্য অত্যাধুনিক ‘স্টেলথ’ যুদ্ধবিমান SU-57E সরবরাহে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সূত্রের খবর, এই চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে এবং রাশিয়া এই যুদ্ধবিমানের সম্পূর্ণ প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়েছে। এর ফলে ভারত নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনতে পারবে, যা অপারেশনাল সুবিধা বাড়াবে।
শুধু যুদ্ধবিমান নয়, আকাশপথের নিরাপত্তা জোরদার করতে ভারত আরও ৫টি S-400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার পরিকল্পনা করছে। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের থেকে সম্ভাব্য উসকানিমূলক কার্যকলাপকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে।
তবে এমন পরিস্থিতিতে চুপ করে বসে নেই নয়াদিল্লি। তারাও নিজেদের সামরিক শক্তি বাড়ানোর কাজে লেগে পড়েছে। সেক্ষেত্রে নয়াদিল্লির বায়ুসেনাকে শক্তিশালী করতে ‘এসইউ-৫৭ই’ নামের একদম আধুনিক ‘স্টেল্থ’ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার ব্যাপারে আগ্রহী রাশিয়া। আর এই চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই কথা চলছে। এক্ষেত্রে রাশিয়া যুদ্ধবিমানের ১০০ শতাংশ প্রযুক্তি ভারতকে দিতে পারে বলে খবর। তার ফলে ভারত নিজের মতো করে সেই বিমানে বদল আনতে হবে। সেটা ব্যবহারে হবে সুবিধা।
এখানেই শেষ নয়, ভারত নিজেদের আকাশপথকে সুরক্ষিত রাখতে আরও ৫টি S-400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার কথা চলছে। যার ফলে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের যতই বাড়াবাড়ি করুক না কেন, খুব একটা কায়দা করতে পারবে না বলেই মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।