কাশ্মীরে দেশরক্ষায় শহিদ দুই বাঙালি সেনা জওয়ান

October 11, 2025 | 2 min read
Published by: Raj
শহিদ দুই জওয়ান। বাঁদিকে পলাশ ঘোষ ও ডানদিকে সুজয় ঘোষ।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১২.২০: ৬ এবং ৭ অক্টোবর মধ্যবর্তী রাতে দক্ষিণ কাশ্মীরের কিশতোয়ার রেঞ্জে তুষারঝড় এবং বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে পড়েছিল ভারতীয় সেনার একটি দল। জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নেমেছিল দলটি। সেই দলে থাকা দুই সেনা জওয়ান নিখোঁজ হয়ে যান খারাপ আবহাওয়ার জেরে। প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে এই দুই সেনা জওয়ানেরই মৃত্যু হয়েছে। শহিদ দুই জওয়ানই বাঙালি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার এক জওয়ানের দেহ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার অপরজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেহ উদ্ধার হওয়ার পর তা কাঁধে করে পাহাড় থেকে নামিয়েছেন স্থানীয় কাশ্মীরিরা।

জানা গিয়েছে, শহিদ জওয়ানরা সেনার এলিট প্যারা ফোর্সে ছিলেন। শহিদ ল্যান্স হাবিলদার পলাশ ঘোষের বাড়ি মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার রুকুনপুর বলরামপাড়ায় ছিল। আর ল্যান্স নায়েক সুজয় ঘোষের বাড়ি ছিল বীরভূমের রাজনগরের কুন্ডিরা গ্রামে। শুক্রবার ভারতীয় সেনার চিনার কোরের তরফ থেকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে শহিদ জওয়ানদের কুর্নিশ জানানো হয়।

ষষ্ঠীর সকাল। ছুটি কাটিয়ে কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান ভারতীয় সেনার প্যারা কমান্ডো পলাশ ঘোষ। ভাইকে এগিয়ে দিয়েছিলেন দাদা। তারপর কয়েকবার ফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু বুধবার সেনাবাহিনীর বিশেষ সার্চ অপারেশনের সময় থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল তাঁকে। অবশেষে শুক্রবার বাড়িতে খবর এল শহিদ হয়েছেন পলাশ।

একা পলাশ নয়, তুষারঝড়ে হারিয়ে মৃত্যু হয়েছে বীরভূমের রাজনগর কুন্ডিরার নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সুজয় ঘোষেরও। শেষবার দাদাকে ফোন করে অভিযানে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই নিখোঁজ। শুক্রবার খবর আসে আর নেই সুজয়।

শনিবার সকালে খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছে পলাশ ঘোষের স্ত্রী-সহ পরিবার। পলাশের বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, দুই কন্যা ও স্ত্রী। দাদা মৃগাঙ্ক ঘোষ জানিয়েছেন, “ষষ্ঠীর দিন টোটোতে ভাইকে এগিয়ে দিই। ও যে আর ফিরবে না, ভাবতে পারিনি।”
এই খবরে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “আনন্তনাগে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের বাংলার দুই বীর প্যারা-কমান্ডো শহিদ হয়েছেন, এই খবরে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। দেশের সুরক্ষায় অসামান্য সাহস, আত্মত্যাগ ও কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য বীরভূমের ল্যান্স নায়েক সুজয় ঘোষ ও মুর্শিদাবাদের ল্যান্স হাবিলদার পলাশ ঘোষকে জানাই স্যালুট। তাঁদের পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের প্রতি রইল আন্তরিক সমবেদনা। এই কঠিন সময়ে রাজ্য সরকার পরিবারের পাশে থাকবে এবং সবরকম সহায়তা করবে।”

সুজয়ের বাবা কৃষক। বাড়িতে রয়েছেন দাদা। ২০১৮ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। ২৮ বছর বয়সী এই জওয়ান প্যারা কমান্ডার ৫ গ্রুপের এই সৈনিক ছিলেন। দাদা মৃত্যুঞ্জয়কে ফোন করে জানিয়েছিলেন অভিযানে যাচ্ছেন এখন কয়দিন কথা হবে না। সেই কথাই যে শেষ কথা তা কে জানত?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen