চোরাশিকারিদের নজর গরুমারায়! জারি সতর্কতা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৫:৩৪: বৃষ্টি, বন্যা ও ধসে তছনছ উত্তরবঙ্গ। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের বহু জায়গায় ধসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জনজীবন। একইসঙ্গে ভুটান থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত জলের প্রবাহে বিপর্যস্ত হয়েছে জলপাইগুড়ির গরুমারা ও আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়া অভয়ারণ্য। অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ অংশ জলের তলায় চলে যাওয়ায় বহু বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে বলে বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত শনিবার রাতে উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির ফলে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা-সহ একাধিক নদীতে হড়পাবান দেখা দেয়। নদীর জল গরুমারা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বহু পশু ভেসে যায়। বনদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই গন্ডার, বাইসন, হরিণ-সহ ৩০টিরও বেশি বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। জল নামার পর জঙ্গলের ভিতরে আরও মৃতদেহ পাওয়া যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে গরুমারা জঙ্গলে (Gorumara) হাই অ্যালার্ট জারি করেছে বনদপ্তর। চোরাশিকারীদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বনদপ্তরের কর্মীরা জানিয়েছেন, অনেক বন্যপ্রাণীকে উদ্ধার করে চিকিৎসা শেষে জঙ্গলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। জঙ্গল সংলগ্ন গ্রাম ও লোকালয় থেকে একের পর এক সাপ উদ্ধার হচ্ছে। বনদপ্তরের আশঙ্কা, এখনও বহু প্রাণীর দেহ আনাচে-কানাচে পড়ে রয়েছে, যা চোরাশিকারীদের হাতে পড়তে পারে।
বনদপ্তর ইতিমধ্যেই ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। গরুমারা জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিন মাইকিং করে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনও বন্যপ্রাণী বা তার দেহাংশ চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে বনদপ্তরকে জানাতে হবে।
জল নামার পর বনদপ্তর এখন জঙ্গলের ভিতরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ শুরু করেছে। এই বিপর্যয়ের প্রভাব কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা নির্ভর করছে উদ্ধার ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার উপর। উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এখন জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।