রাজ্য সরকারি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের পিএফের আওতায় আনার উদ্যোগ
সদ্য আইনে পরিণত হয়েছে চারটি নয়া শ্রম কোড। যা দেশের শ্রমজীবী মানুষকে আরও বেশি সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনবে। এমনই দাবি করেছে কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে এবার রাজ্য সরকারের তামাম চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে প্রভিডেন্ড ফান্ডের আওতায় আনতে চাইছে সংশ্লিষ্ট নিগম। নানা দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কয়েক লক্ষ এমন অস্থায়ী কর্মচারীর ভবিষ্যৎ কিছুটা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই তাদের এই পরিকল্পনা। যা বাস্তবায়িত করতে ইতিমধ্যে সরকারি দপ্তরগুলিকে ধাপে ধাপে প্রস্তাব দিতে শুরু করেছে আঞ্চলিক পিএফ কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি রাজ্য ও কলকাতা পুলিস এবং শ্রমদপ্তরকে এব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছে তারা। পাশাপাশি নতুন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি নব মহাকরণে শ্রমদপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সৈয়দ আহমেদ বাবার সঙ্গে একটি বৈঠক হয় আঞ্চলিক পিএফ দপ্তরের শীর্ষ কর্তাদের। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হলেও সরকার কোনও সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। নবান্ন সূত্রের খবর, বর্তমানে সরকারি নিয়োগের আওতায় রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রিন পুলিস, ভিলেজ পুলিস, নানা ধরনের শিক্ষক সহ নির্দিষ্ট মাসিক বেতনের ভিত্তিতে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ চুক্তিভিত্তিক কর্মী। প্রতি মাসে তাঁদের বেতন ও অন্যান্য কিছু সুবিধা বাবদ সরকারের কয়েকশো কোটি টাকা খরচ হয়। পাশাপাশি এই কর্মীদের ৬০ বছর পর্যন্ত কাজের নিশ্চয়তা এবং তারপর এককালীন টাকা দেওয়ার ব্যাপারেও উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। এরপর তাঁদের ইপিএফ সুবিধা চালু হলে ১২ শতাংশ হারে নিয়োগকারীর দেয় অংশ জমা দিতে হবে নবান্নকে। রাজ্য সরকারের কোষাগারের পক্ষে এই মুহূর্তে সেই ব্যয়ভার বহন করা কার্যত অসম্ভব। তবে বিষয়টি ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চালাবে প্রশাসনের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব।
সরকারি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ইপিএফের আওতায় আনার এই উদ্যোগের ব্যাপারে অন্যতম আঞ্চলিক কমিশনার নবেন্দু রায় বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি মোতাবেক পিএফ-এর পরিধি সম্প্রসারণে আমরা বদ্ধপরিকর। তাই সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের পিএফের সুবিধা দিতে পরিকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে। রাজ্য সরকার দ্বারা নিযুক্ত বিরাট সংখ্যক কর্মীদের ভবিষ্যৎ তথা অবসরকালীন সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমরা এই পরিকল্পনা নিয়েছি। বিহারে নীতীশ কুমার সরকার ইতিমধ্যে এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এবার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া কোনও বেসরকারি এজেন্সি বা সংস্থার মাধ্যমে কর্মীদের যুক্ত করা হলে এই পরিকল্পনা জানানোর জন্য তাদের নামধামও চাওয়া হচ্ছে।’