রাজ্যের চটকল শ্রমিকদের স্বার্থে সক্রিয় হল রাজ্য সরকার
একইসঙ্গে বোনাস সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এলে দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী।

রাজ্যের চটকল শ্রমিকদের স্বার্থে সক্রিয় হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী সরকার আগামী দেড় মাসের মধ্যে অন্তত ১০ হাজার অস্থায়ী শ্রমিকের চাকরি পাকা করার নির্দেশ দিল মালিকপক্ষকে। একইসঙ্গে আরও অন্তত ১০ হাজার অস্থায়ী শ্রমিকের পদোন্নতির নিদানও দিয়েছে সরকার। মন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে সম্প্রতি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পর এই নির্দেশ জারি করেছে শ্রমদপ্তর। এব্যাপারে তারা চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-কেও চিঠি পাঠিয়েছে।
শুধু কাজের স্থায়ীকরণ বা পদোন্নতি নয়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে লকডাউন পর্বে চটকল শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন মেটানোর ব্যাপারেও সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল দপ্তর। কিন্তু আইজেএমএ এব্যাপারে কেন্দ্রের জারি করা নির্দেশিকার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করায় শ্রমদপ্তর সেভাবে সক্রিয় হতে পারছে না। তবে চটকল শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি মেনে ওই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন জানানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে বোনাস সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এলে দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী। দপ্তর সূত্রে এখবর জানা গিয়েছে। আইজেএমএ-কে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, চটকল শিল্পের সমস্যা মেটানো নিয়ে গত বছর মার্চে যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল, তাতে ১০ হাজার অস্থায়ী শ্রমিককে স্থায়ী করার পক্ষে সায় দিয়েছিল মালিকপক্ষ। পাশাপাশি অস্থায়ী ‘বদলি’ কর্মীকে পদোন্নতির মাধ্যমে স্পেশাল বদলি করা হবে বলেও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। তাই সেই চুক্তি অনুযায়ী আগামী দেড় মাসের মধ্যে অন্তত ২০ হাজার শ্রমিকের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করতে হবে মালিকপক্ষকে। কোন চটকলে কতজন স্থায়ী বা স্পেশাল বদলি শ্রমিক তালিকাভুক্ত হবে, তা ১৫ দিনের মধ্যে দপ্তরকে জানানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইজেএমএ’র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্তা বলেন, এই শিল্পকে বাঁচাতে কেন্দ্র কোনও আর্থিক প্যাকেজ না দেওয়ায় তাঁরা সঙ্কটে পড়েছেন। মালিকপক্ষ রাজ্যকে লিখিতভাবে জানালে শ্রমদপ্তর কেন্দ্রের কাছে এনিয়ে তদ্বির করবে। সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও শ্রমিক সংগঠনগুলি এতে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। এআইটিইউসি’র দেবাশিস দত্ত ও সিটুর অনাদি সাহুরা বলেছেন, মালিকপক্ষ গত দেড় বছর ধরে ত্রিপাক্ষিক চুক্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চালিয়ে গেল। ভোট এগিয়ে আসায় এতদিনে সরকারের টনক নড়েছে। আমরা সংগঠনগুলির তরফে সুপ্রিম কোর্টের ওই মামলায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নিতে শুরু করেছি।