Aparna Sen’s Birthday: ৮০-তে ‘মিস ক্যালকাটা’, আজও প্রাণবন্ত ও দীপ্ত
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৩০: আজ ফুরফুরে এক রোদের জন্মদিন। ‘১৯৭৬ সালের মিস কলকাতা’ অপর্ণা সেন – অভিনেত্রী, পরিচালক, সম্পাদক, সমাজ সচেতন নাগরিক- বহু পরিচয়ে যিনি বাংলা ও ভারতীয় সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল মুখ। শনিবার ৮০ বছর পূর্ণ হচ্ছে অভিনেতা, লেখক, পরিচালক অপর্ণা সেনের (Aparna Sen 80th Birthday)। কিন্তু তাঁর প্রাণচঞ্চলতা, সৃজনশীলতা এবং শিল্পীসত্তা যেন আজও ‘Sweet Sixteen’-এর মতোই তরতাজা। আজ তাঁর সন্ধেয় জন্মদিনের অনুষ্ঠান। আয়োজনে রয়েছেন মেয়ে কঙ্কনা সেন শর্মা।
১৯৪৫ সালের এই দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন অপর্ণা সেন (Aparna Sen)। বাবা চিদানন্দ দাশগুপ্ত ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সমালোচক, আর মা সুপ্রিয়া দাশগুপ্ত ছিলেন কবি জীবনানন্দ দাশের আত্মীয়া। সাহিত্য ও সিনেমার পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা অপর্ণা ছোটবেলা থেকেই ‘রীনা’ নামে পরিচিত ছিলেন পরিবারের মধ্যে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে সত্যজিৎ রায়ের ‘তিনকন্যা’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে তাঁর যাত্রা শুরু। এরপর ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘জন অরণ্য’-র মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকের মনে গেঁথে আছে। মৃণাল সেনের ‘আকাশকুসুম’, ‘একদিন আচানক’, ‘মহাপৃথিবী’-র মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় ছিল অনবদ্য। ‘বসন্ত বিলাপ’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে।
১৯৭৪ সালে পরিচালক শ্যাম বেনেগল (Shyam Benegal) তাঁর প্রথম ছবি অঙ্কুরের (Ankur) ‘লক্ষ্মী’ চরিত্রে প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিলেন অপর্ণা সেনকে। ততদিনে অপর্ণা পরিচিত মুখ- শিশুশিল্পী থেকে সত্যাজিৎ রায়ের ‘সমাপ্তি’-র নায়িকা হয়ে উঠেছেন। ‘লক্ষ্মী’ চরিত্রটি ছিল অন্ধ্র প্রদেশের গ্রামীণ দলিত এক গৃহপরিচারিকার। অপর্ণা পরবর্তীতে বলেছিলেন,“আমি ভয় পেয়েছিলাম চরিত্রটা ঠিকঠাক করতে পারব কি না। তাই না করেছিলাম।”
উত্তমকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সকলের সঙ্গে তাঁর রসায়ন ছিল অসাধারণ। বলিউডেও তিনি সমান দক্ষতায় অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন, শশী কাপুর, দিলীপ কুমার, শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে।
অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনায়ও তিনি রেখেছেন নিজের স্বাক্ষর। ১৯৮১ সালে তাঁর প্রথম পরিচালিত ছবি ‘থার্টি সিক্স চৌরঙ্গী লেন’ তাঁকে এনে দেয় জাতীয় পুরস্কার। এরপর ‘পরমা’, ‘পারমিতার একদিন’, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার’, ‘১৫ পার্ক অ্যাভিনিউ’, ‘গোয়েন্দা গোগোল’, ‘দ্য রিপাবলিক অফ লাভ’- একের পর এক প্রশংসিত ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি।
চলচ্চিত্রের বাইরেও অপর্ণা সেনের অবদান কম নয়। এক সময় নারীকেন্দ্রিক একটি পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। সমাজ ও রাজনীতিতে তাঁর স্পষ্ট ও নির্ভীক অবস্থান তাঁকে দিয়েছে আলাদা মর্যাদা।
অপর্ণা সেন পেয়েছেন একাধিক জাতীয় পুরস্কার, বিএফজেএ (Bengal Film Journalists' Association) সম্মান এবং ১৯৮৭ সালে ভারত সরকারের পদ্মশ্রী। দেশ-বিদেশের বহু চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন গর্বের সঙ্গে।