পুজোয় এবার ভিড় রুখে কোভিডকে ঠেকানোই বড় চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিসের
পুজোয় এবার ভিড় রুখে কোভিডকে ঠেকানোই বড় চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিসের। ফলে আর চতুর্থী নয়, তৃতীয়া থেকেই পথে নামছে তারা। অর্থাৎ একদিন আগে থেকেই রাস্তায়, প্যান্ডেলে ভিড় ও যান শাসনে কড়া হচ্ছে পুলিস। সেই সঙ্গে অবশ্যই নজর থাকবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারে। দর্শনার্থীদের মুখে মাস্ক ‘মাস্ট’। হাতে স্যানিটাইজার। মানতে হবে দূরত্ববিধি। তা না হলে প্যান্ডেলে প্রবেশ নয়। প্রবেশ পথও হতে হবে প্রশস্ত। আর পুজোর ক’টা দিন শুধু মায়ের আরাধনা ছাড়া কিছুই নয়। জলসা সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপর সম্পূর্ণ মানা। শোভাযাত্রাতেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা। ভাসানের নির্ধারিত দিন ২৯ অক্টোবর। ওইদিনই প্রতিমা নিরঞ্জন বাধ্যতামূলক। প্রসাদ বিতরণ, সিঁদুর খেলাতেও মানতে হবে কোভিডবিধি। অঞ্জলির সময় মাইক ব্যবহার করবেন পুরোহিতরা। শুক্রবার পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে এই একগুচ্ছ নির্দেশিকা ঘোষণা করে দিল কলকাতা পুলিস। রাজ্যের ঘোষিত ‘গাইড লাইন’-এর সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তৈরি হয়েছে এই নির্দেশিকা।
এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দমকল, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কলকাতা পুলিসের কর্তাব্যক্তিরা। সেখানে কমিশনার অনুজ শর্মা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, করোনাকে রুখতে সতর্কতামূলক সব ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘পুজোর একটি ‘গাইড লাইন’ প্রকাশ করেছে সরকার। সেই মতো পুজো করতে হবে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের অনুরোধ করেছেন। সে সব মাথায় রেখে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে একটা কথা খুব স্পষ্ট করে দিচ্ছি, আমি নিজে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলাম। আমার দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তা হলেও আমি কঠোরভাবে সব নিয়মকানুন মেনে চলছি। কোনওভাবেই করোনা যাতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, সেদিকে সবাই সতর্ক থাকুন। গাফিলতি একেবারেই নয়।’
নেতাজি ইন্ডোরে এই বৈঠকের আগে কসবার পরিবহণ ভবনে বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি ও অটো মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করে কলকাতা পুলিস। সেখানেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৃতীয়া থেকে রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। জানা গিয়েছে, পুলিসের এই উদ্যোগে সায় রয়েছে সংগঠনগুলির। তবে বাসের ‘হুকুম দখল’ করার ক্ষেত্রে আপত্তি তুলেছেন মালিকরা। তাঁদের প্রস্তাব, এবার পুলিসের তরফে ‘হুকুম দখল’ না করলেই ভালো। প্রস্তাবটি বিবেচনা করে দেখা হবে বলে বৈঠকে আশ্বস্ত করেছেন পুলিসকর্তারা।
কলকাতা পুলিসের হিসেব অনুযায়ী গত বছর শহরে মোট পুজোর সংখ্যা ছিল দু’ হাজার ৫০৯টি। এর মধ্যে ১২৫টি পুজো কমিটি ‘অফ লাইন’-এ অনুমোদন পায়। এবার ২ অক্টোবর থেকে ‘আসান’ অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিসের যুগ্ম কমিশনার জানিয়েছেন, গতবারের ১২৫টি পুজো কমিটিকে এবার ‘আসান’-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এদিন নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিইএসসি’র প্রতিনিধিরাও। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করতে উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করেছেন তাঁরা। সিইএসসি’র যুক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অনলাইন পরীক্ষা হচ্ছে। ফলে সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে হচ্ছে। প্যান্ডেলে সংযোগ দিতে হলে বিদ্যুৎ পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়। দ্রুত আবেদন করলে সেই মতো ব্যবস্থা নিতে তাদের সুবিধা হবে।