ভোটের মুখে ১২ রাজ্যে SIR, বাদের খাতায় অসম! কী ব্যাখ্যা কমিশনের?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:০০: দেশের ১২টি রাজ্যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হলেও বিজেপি (BJP) শাসিত অসমে তা কার্যকর হচ্ছে না। এই রাজ্যেও আগামী মার্চ-মে মাসের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। অথচ পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, পুদুচেরির মতো রাজ্যগুলিতে এসআইআর শুরু হচ্ছে।
এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) তরফে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কমিশনের মতে, ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনে অসমের জন্য রয়েছে একটি পৃথক ধারা, যা অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সেই কারণেই অসমে এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া চালু করা হয়নি। প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারাটি শুধুমাত্র অসমের জন্যই তৈরি হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে অসমে (Assam) অনুপ্রবেশ বিরোধী আন্দোলনের পর ভারত সরকার (India Govt) ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে যে ‘অসম চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়, তারই অংশ হিসেবে এই ধারা সংযোজন করা হয়। সোমবার নির্বাচন কমিশন সেই বিশেষ ধারার কথাই তুলে ধরে অসমে এসআইআর না চালুর সিদ্ধান্তকে যুক্তিসঙ্গত বলে ব্যাখ্যা করেছে।
অসমের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যে এসআইআর (SIR) না হওয়ার আরেকটি বড় কারণ হল আসন পুনর্গঠনের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ২০০১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে ২০২৩ সালে বিধানসভা ও লোকসভার সীমানা পুনর্নির্ধারণ শুরু হয়। যদিও সেই কাজ শেষ হলেও, নতুন সীমানা অনুযায়ী বুথভিত্তিক ভোটার তালিকা তৈরি করা যায়নি এখনও। ফলে এসআইআর চালু করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অসমে ভোটার তালিকা সংশোধনের জটিলতার মূল কেন্দ্রে রয়েছে এনআরসি (NRC) বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশে একমাত্র এই রাজ্যেই গত দুই দশক ধরে এনআরসি তৈরির কাজ চলছে। ২০১৯ সালে প্রকাশিত খসড়া তালিকায় ৩ কোটি ১১ লাখ মানুষের নাম থাকলেও, ১৯ লাখ মানুষকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরে চূড়ান্ত তালিকায় সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৯ লাখে। এই সংখ্যাকে ঘিরেই তৈরি হয় বিতর্ক। অসমের বিজেপি (BJP) সরকার বরাবরই দাবি করে এসেছে, প্রকৃত বিদেশির সংখ্যা আরও অনেক বেশি। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma) একাধিকবার এনআরসি প্রক্রিয়ার ত্রুটি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিরোধীদের একাংশের মতে, এনআরসি-সংক্রান্ত (NRC) বিতর্ক ও অসম সরকারের আপত্তির জেরে কমিশন হয়তো চাপের মুখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, অসমের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। তবে সেই বিজ্ঞপ্তি কবে প্রকাশিত হবে এবং কবে থেকে সেখানে এসআইআর কার্যকর হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা জানানো হয়নি।