“একটা বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে ১ লক্ষ লোক নিয়ে কমিশন ঘেরাও”, SIR নিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক

October 28, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি,১৭:২৫: ২৬শের নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধন (SIR) নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে চলছে SIR বা Silent Invisible Rigging, যার মাধ্যমে চুপি চুপি ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। “ওদের উদ্দেশ্য কোনওভাবেই ভোটার তালিকা শুদ্ধ করা নয়,” বলেন অভিষেক।

অভিষেক বলেন, “একটা বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলেও আমরা ১ লক্ষ লোক নিয়ে কমিশন অফিস ঘেরাও করব।” তাঁর প্রশ্ন, “২০২১ বা ২০২২ সালে এই প্রক্রিয়া কেন শুরু হয়নি? ভোটের ঠিক আগে সাত মাস সময় নিয়ে এই তালিকা সংশোধনের অর্থ কী? তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “আগে যখন SIR হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ করতে সময় লেগেছিল দুই বছর। এবার বলা হচ্ছে মাত্র দুই মাসে কাজ শেষ হবে! কীভাবে? এত তাড়াহুড়ো কেন?”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “সরকার কাজ করবে কীভাবে? যদি এই সময় কোনও অঘটন ঘটে, তার দায় কে নেবে? সন্দেশখালির মিথ্যা ঘটনা তুলে ধরে বাংলাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে। মহিলাদের সাদা কাগজে সই করিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ছিল বিজেপি।”

ভারতের মানচিত্র তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে এমন পাঁচটি রাজ্য রয়েছে- অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও পশ্চিমবঙ্গ। তাহলে কেন শুধুমাত্র বাংলায় এই SIR? যদি বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হয়ে থাকে, তাহলে অন্য রাজ্যগুলোতে এই প্রক্রিয়া কেন নয়? ত্রিপুরায় রোহিঙ্গা, আর অসমে বাংলাদেশি ধরা পড়েছিল বলে খবরে দেখিয়েছিল। এই দুই রাজ্যে SIR হচ্ছে না। হচ্ছে শুধুমাত্র বাংলায়, কেন? তাঁর অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্য হওয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে অসমকে এই তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।”

অভিষেক মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “বর্ডার থেকে অনুপ্রেবেশ রুখতে পারছেন না, কাস্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রেবেশ রুখতে পারছেন না, তাহলে আপনি (অমিতশাহ) পদত্যাগ করুন।”

তাঁর দাবি, “মানুষ যদি ভোট দেয়, বিজেপির অস্তিত্ব থাকবে না বলেই ভোটারদের বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র।”

অভিষেক স্মরণ করিয়ে দেন, কীভাবে দিল্লিতে বাংলার পাওনা আদায়ের জন্য তাঁরা আন্দোলনে গিয়েছিলেন। “বীরবাহা হাঁসদা, মহুয়া মিত্র সহ মহিলা সাংসদদের টেনে হিঁচড়ে বের করে দেওয়া হয়েছিল। কৃষি ভবন থেকেও আমাদের বের করে দেওয়া হয়। মহিলাদেরও রেহাই দেওয়া হয়নি।”

তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম, এই লড়াই দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জমিদারদের বোঝাবো বাংলার শক্তি কী। আমাদের সরকার ৫৯ লক্ষ প্রকৃত জব কার্ড হোল্ডারদের টাকা পায়নি। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আবাস যোজনার টাকা বন্ধ, সর্বশিক্ষা মিশন ও জল জীবন মিশনের অর্থ বন্ধ। বাংলাকে ভাতে মারার চেষ্টা চলছে।”

অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি পরিকল্পিতভাবে বাংলার সাধারণ মানুষকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে আমরা চুপ করে থাকব না। বাংলার মানুষের অপমান হলে তার জবাব দেওয়া হবে।”

এদিন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, “আজ নয় কাল কিন্তু সরকার পাল্টাবে জ্ঞ্যানেশবাবু, তখন দেশ ছেড়ে পালাবেন না। যেখানে যাবেন খুঁজে বের করব।”

এছাড়াও  পানিহাটির যুবকের আত্মহত্যা প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, “আজ একজন মারা গেছেন পানিহাটিতে। বিজেপির কেউ খবর নিয়েছে? তৃণমূল ওদের পাশে আছে। আমি কথা বলেছি পরিবারের সঙ্গে। যে কোনওদিন দরজায় ছিটকিনি দিত না, গতকাল দিয়েছে। আজ মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে, সঙ্গে সুসাইড নোট। তাতে লেখা, মৃত্যুর জন্য SIR-NRC দায়ী। আর কত রক্ত চান জ্ঞানেশ কুমার, অমিত শাহ? এত ঔদ্ধত্য অহংকার?” তিনি আরও বলেন, “আজ যে প্রদীপ কর মারা গেলেন এর জবাব বাংলার মানুষ দেবে। জ্ঞানেশ কুমার আর শাহ এর জন্য দায়ী। ওদের নামে এফআইআর হওয়া উচিত।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen