Women’s ODI World Cup 2025: জেমাইমা-হরমনপ্রীত দুরন্ত ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২৩:০০: বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-অস্ট্রেলিয়া। রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া ভেবেছিল মার দিয়া কেল্লা! কিন্তু স্মৃতিরা বোধহয় ফিসফিস করে বলেছিলেন, ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত।’ তাই হল। বিরাট রানের পাহাড় ডিঙিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালের টিকিট মুঠোয় পেলেন জেমাইমা-হরমনপ্রীতরা।
একটা সময়ে ৫৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ভারতীয় দল। আরও একবার স্বপ্নভঙ্গের সিঁদুরে মেঘ দেখছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। কিন্তু হাল ছাড়েননি হরমনপ্রীত কৌর ও জেমাইমা রদ্রিগেস। স্বপ্ন সত্যি হলো তাঁদের হাত ধরেই। অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল টিম ইন্ডিয়া।
কঠিন পরিস্থিতিতে ৮৯ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেললেন হরমনপ্রীত কৌর। দুরন্ত সেঞ্চুরি জেমাইমার। ১২৭ রানে অপরাজিত রইলেন তিনি। শেষবেলায় ঝোড়ো ইনিংস দীপ্তি শর্মা, রিচা ঘোষের। ৩৩৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে নয় বল বাকি থাকতেই জয় পেল ভারত।
নবি মুম্বইয়ে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অ্যালিসা হিলি। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক চেয়েছিলেন, বড় রান বোর্ডে তুলতে। কিন্তু তিনি বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি। এক বার তাঁর সহজ ক্যাচ ছাড়েন হরমনপ্রীত। তার পরেও মাত্র ৫ রানে ক্রান্তি গৌড়ের বলে আউট হন হিলি। অপর ওপেনার ফিবি লিচফিল্ড প্রথম বল থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিলেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগান তিনি। লিচফিল্ডকে সঙ্গ দেন এলিস পেরি। দু’জনে মিলে দ্রুত রান করছিলেন। দুই ব্যাটারের মধ্যে ১৫৫ রানের জুটি হয়।
শতরান করে লিচফিল্ড। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তাঁর ঝোড়ো ইনিংস চাপ বাড়াচ্ছিল ভারতের উপর। সেই জুটি ভাঙেন আমনজ্যোৎ কৌর। ১১৯ রানের মাথায় লিচফিল্ডকে আউট করেন তিনি। সেই জুটি ভাঙার পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের স্পিনারেরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। হাত খুলতে না পেরে পর পর উইকেট পড়তে থাকে। পেরি করেন ৭৭ রান। বেথ মুনি ২৪ রানে আউট হন। অ্য়ানাবেল সাদারল্যান্ড (৩) ও তাহিলা ম্যাকগ্রা (১২) রান পাননি।
একটা সময় দেখে মনে হচ্ছিল, ৩০০ রান করতে সমস্যা হবে অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু অভিজ্ঞ অ্য়াশলি গার্ডনার তখনও ক্রিজ়ে ছিলেন। চলতি বিশ্বকাপে জোড়া শতরান করেছেন তিনি। সেই ছন্দ দেখা গেল এই ম্যাচেও। ৪৫ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেললেন গার্ডনার। তবে তাঁকে বাকিরা সঙ্গ দিতে পারেননি। ফলে পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৮ রানে অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের বোলারদের মধ্যে শ্রী চরণী ও দীপ্তি শর্মা ২ করে উইকেট নেন। ১ করে উইকেট নেন ক্রান্তি, আমনজ্যোৎ ও রাধা যাদব।
এত বড় টার্গেটের লক্ষ্যে নামলে ওপেনিং জুটির সফল হওয়াটা খুব জরুরি হয়ে ওঠে। কিন্তু ভারত শুরুতেই শেফালিকে হারায়। মাত্র ১০ রান করেন তিনি। স্মৃতি মন্ধানা ও জেমাইমা রডরিগেজ দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। মোটামুটি ৬ রান ওভার পিছু রেখে স্কোরবোর্ড সচল রাখছিলেন তাঁরা। কিন্তু আচমকাই কিম গার্থের বলে আউট মন্ধানা। তিনি ২৪ রানে ফেরেন। ভারত তখন ৫৯/২। দশম ওভার চলছে। এই পরিস্থিতিতে দুরন্ত জুটি বাঁধলেন রডরিগেজ ও অধিনায়ক হরমনপ্রীত কউর।
৮৯ রানের মাথায় সাদারল্যান্ডের বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন হরমনপ্রীত। তিনি আউট হওয়ার পর জেমাইমার সঙ্গে জুটি বাঁধেন দীপ্তি। ভাল খেলছিলেন তিনি। মাঝে একটা সময় জেমাইমা বড় শট খেলতে পারছিলেন না। সেই সময় দীপ্তি দায়িত্ব দেন। কিন্তু ২৪ রানের মাথায় রান আউট হন তিনি। ছ’নম্বরে নেমে বাংলার রিচা ঘোষও প্রথম বল থেকে বড় শট মারতে শুরু করেন। দু’টি চার ও দু’টি ছক্কা মারেন তিনি। দেখে মনে হচ্ছিল, দ্রুত খেলা শেষ করার চেষ্টা করছেন তিনি। সেটা করতে গিয়ে ১৬ বলে ২৬ রান করে আউট হন রিচা। তত ক্ষণে অবশ্য ভারত জয়ের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। জেমাইমা অপরাজিত রইলেন ১২৭ রানে (১৪x৪)। শেষ পর্যন্ত ৩৩৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে নয় বল বাকি থাকতেই জয় পেল ভারত।