২৬শের আগে হাত ছেড়ে পদ্মে যাচ্ছেন অধীর? শুভেন্দুর মন্তব্যে জল্পনা

November 8, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৫৩: আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। শাসক ও বিরোধী শিবির ভোট প্রস্তুতির কাজে নেমে পড়েছে। সব রাজনৈতিক দলই চূড়ান্ত কৌশলের নীল নকসা তৈরিতে ব্যস্ত। এরই মধ্যে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের সম্ভাবনা ঘিরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।

শনিবার সকালে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি (BJP) নেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মুখে অধীররঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) প্রশংসা সেই জল্পনাকে আরও উসকে দিয়েছে। অধীরকে ‘শক্তিশালী নেতা’ বলে অভিহিত করে শুভেন্দু বলেন, কংগ্রেসে তাঁর গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসলে মমতার বিরুদ্ধে লড়াই থেকে সরে আসার ইঙ্গিত। শুভেন্দুর বক্তব্য, “কংগ্রেস তো ঘোষিত মমতার বন্ধু। আর যেদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অধীরকে সরালেন, সেদিন রাহুল, সোনিয়া, মল্লিকার্জুন খাড়গে সিগনাল দিয়েছেন মমতার সঙ্গে লড়ব না। মমতার সঙ্গে লড়লে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, সোমেন মিত্র, গনিখান চৌধুরী, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পর শক্তিশালী নেতা হলেন অধীর। যদি সত্যি মমতার বিরুদ্ধে লড়তেন তবে অধীরকে সরাতেন না।”

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের নেতৃত্বে ছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান বরাবরই ছিল কঠোর। তাঁর নেতৃত্বেই রাজ্যে এবং কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রকাশ্যে আসে।

জাতীয় রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) গুরুত্বকে অস্বীকার করেন না কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই কারণেই অধীরের আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়ে দিল্লির অস্বস্তি ছিল দীর্ঘদিনের। শেষপর্যন্ত তাঁকে সরিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব দেওয়া হয় তুলনামূলকভাবে ‘নরমপন্থী’ শুভঙ্কর সরকারকে। ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, শুভঙ্করের সঙ্গে অধীরের সম্পর্ক খুব একটা মসৃণ নয়। ফলে রাজ্য রাজনীতিতে বর্তমানে প্রায় অন্তরালেই রয়েছেন অধীর।

এই প্রেক্ষাপটে শুভেন্দু অধিকারীর মুখে তাঁর প্রশংসা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সম্ভাব্য সমীকরণ ঘিরে জল্পনা। যদিও অধীররঞ্জন চৌধুরীর তরফে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি, তবে ভবিষ্যতের রাজনীতিই বলে দেবে এই প্রশংসার পরিণতি কী হতে চলেছে।

রাজ্যে SIR প্রক্রিয়া ঘিরে বিজেপির অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক বক্তব্যেও সেই চাপের ছাপ স্পষ্ট।

বিশেষত মতুয়া ও রাজবংশী সম্প্রদায়ের মধ্যে SIR সংক্রান্ত বিভ্রান্তি ও আশঙ্কা থেকে অসন্তোষ বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত মামলায় রানাঘাট ও রায়গঞ্জের সংশোধনাগারে বন্দি থাকা ব্যক্তিদের মুক্তির ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ভোটব্যাঙ্কে, যার প্রভাব বিজেপির নির্বাচনী ফলাফলে পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের।

এই পরিস্থিতিতে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর অংশ হিসেবে শুভেন্দু বারবার আশ্বাস দিচ্ছেন, SIR-এর মাধ্যমে যদি কারও নাম বাদ যায়, তবে পরবর্তীতে CAA (Citizenship Amendment Act) প্রয়োগ করে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen