SIR আতঙ্কে মৃত্যু, পাঁচ শোকসন্তপ্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা অভিষেকের টিমের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:০০: SIR আতঙ্কে রাজ্যে মৃত্যুর মিছিল। ভোটার তালিকা (Voter List) থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠছে একাধিক জায়গায়। সেই তালিকায় যুক্ত হল টিটাগড়ের কাকলি সরকারের (Kakoli Sarkar) নাম।
শনিবার কাকলির বাড়িতে পৌঁছালেন তৃণমূলের (TMC) প্রতিনিধি দল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নির্দেশে গঠিত বিশেষ কমিটির সদস্যরা মৃতার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন। উপস্থিত ছিলেন নারী ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja), বারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakrabarty), সাংসদ পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick), পৌরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস (Uttam Das) এবং পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ দপ্তরের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম (Samirul Islam)।
পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন প্রতিনিধিরা। কাকলির দুই মেয়ের ভবিষ্যৎ ও স্বামী সবুজ সরকারের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার কথাও জানান তাঁরা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে শশী পাঁজা বলেন, “স্রেফ আতঙ্কের জেরে অসময়ে একটা প্রাণ চলে গেল। কাকলির বাড়ির সবার সঙ্গে কথা বললাম। ওর দুই মেয়ে আছে। ওর স্বামী সবুজের চিকিৎসা চলছে। পরিবারের থেকে শুনলাম, টিভিতে ও বিজেপি নেতাদের ভয় দেখানো সব কথা শুনত আর আতঙ্কে ভুগত, যদি ওকে দেশ থেকে বাইরে চলে যেতে হয়। ভয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমরা বলেছি যে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আপনাদের পাশে আছি, থাকব। মেয়েরা পড়াশোনা করুক, ভালো থাকুক। যা যা খরচ দরকার, আমরা দিয়ে গেলাম।”
SIR আতঙ্কে রাজ্যে ইতিমধ্যেই প্রায় ১৭ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শাসকদলের দাবি, বিজেপি (BJP) নেতাদের ‘জ্বালাময়ী’ ভাষণই এই আতঙ্কের কারণ।
এছাড়াও অভিষেকের নির্দেশে একের পর এক শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে সক্রিয় হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করছেন দলের শীর্ষ নেতারা ও জনপ্রতিনিধিরা।
‘SIR আতঙ্কে’ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে পানিহাটিতে, মৃত ব্যক্তি প্রদীপ কর (Pradeep Kar)। তাঁর বাড়িতে ফের গিয়ে দেখা করেন ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick) ও রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম (Samirul Islam)। এর আগেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) নিজে আগরপাড়ায় গিয়ে প্রদীপের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এবার ফের তাঁর নির্দেশেই নেতারা পৌঁছান ওই বাড়িতে।
হুগলির ডানকুনিতে মৃত হাসিনা বেগমের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) ও টিএমসিপি (TMCP) নেতা সুদীপ রাহা (Sudip Raha)।
শেওড়াফুলির গড়বাগানের যৌনপল্লিতে আত্মঘাতী যৌনকর্মী বীতি দাসের (Biti Das) পরিবারের পাশে দাঁড়ান চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন (Arindam Guin) ও টিএমসিপির প্রাক্তন সভাপতি জয়া দত্ত (Jaya Dutta)।
উলুবেড়িয়ার জাহির মালের বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায় (Pulak Roy) ও তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী অরূপ চক্রবর্তী (Arup Chakraborty)।
জানা গিয়েছে, প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তা। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে পরিমাণ জানানো হয়নি, তবে দলীয় সূত্রে খবর, প্রতিটি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা করে। শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পরিবারগুলোর যেকোনও প্রয়োজনে দল পাশে থাকবে। বিশেষ করে যেসব পরিবারে পড়ুয়া রয়েছে, তাদের শিক্ষাজীবনে যাতে কোনও বাধা না আসে, সে বিষয়েও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতেও যেখানে যেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে পৌঁছাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।