১০/১১ দিল্লি বিস্ফোরণ : ‘দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ’, দিল্লির ঘটনায় অমিত শাহের পদত্যাগের দাবি তৃণমূলের

November 11, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:৫৯:  সোমবার সন্ধ্যায় লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১২ জনেরও বেশি মানুষ মৃত্যু হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের নীরবতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। মঙ্গলবার, এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় মুখপাত্ররা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) পদত্যাগ দাবি করেন। তাঁদের অভিযোগ, “দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, অথচ সরকার দায় স্বীকারে ব্যর্থ।”

১০ নভেম্বর দিল্লির লালকেল্লার কাছে একটি বিস্ফোরক-ভর্তি ধীরগতির গাড়িতে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এটি একটি আইইডি বিস্ফোরণ। তৃণমূলের প্রশ্ন, “যদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই না জানেন এটি সন্ত্রাসবাদী হামলা কি না, তাহলে গোটা দেশের নিরাপত্তা কার হাতে?” দিল্লি পুলিশ সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন, তাই দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলেই দাবি তাঁদের।

দলের মুখপাত্র শশী পাঁজা (Shashi Panja) বলেন, “দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা চাই। দেশের আন্তরিক সুরক্ষা বারবার ভেঙে পড়ছে। বিজেপি সরকার আসার পর থেকেই দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “নোটবন্দির সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ বন্ধ হবে। কিন্তু হয়নি। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে, প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত বিদেশ সফরে। দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।”

রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick) বলেন, “দিল্লির বিস্ফোরণ একটি বড় নিরাপত্তা ব্যর্থতা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এটি আইইডি বিস্ফোরণ। অথচ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, ‘ঘটনাটা কিভাবে ঘটেছে বলা কঠিন।’ যাঁর হাতে দেশের নিরাপত্তা, তিনি যদি এমন বলেন, তাহলে মানুষ কাকে ভরসা করবে?”

তাঁর অভিযোগ, “বিজেপি সরকার ইচ্ছে করে এসব ঘটনার পর ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি করে। সীমান্তবর্তী হামলা এখন রাজধানীর বুকে ঘটছে। দেশের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।”

তৃণমূলের বক্তব্যে উঠে আসে একাধিক অতীত সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রসঙ্গ। ২০১৫-র গুরুদাসপুর, উধমপুর; ২০১৬-র উরি ও পাঠানকোট; ২০১৯-র পুলওয়ামা এবং সদ্য ঘটে যাওয়া ২০২৫-র পহেলগাঁও হামলা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা ও দায় এড়ানোর প্রবণতা তুলে ধরেন তাঁরা।

অভিযোগ, “অগ্নিবীর প্রকল্পের ফলে সেনাবাহিনী দুর্বল হয়েছে, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ কমেছে, আর গোয়েন্দা তথ্য থাকা সত্ত্বেও হামলা ঠেকানো যাচ্ছে না।” তাঁরা আরও বলেন, “নোটবন্দির সময় ১০০-র বেশি মানুষ মারা গেলেও সন্ত্রাসবাদ বন্ধ হয়নি, বরং বেড়েছে।”

তৃণমূলের দাবি, বিস্ফোরণ কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি (সিট) গঠন করে স্বচ্ছ তদন্ত করা হোক। দলের তরফে আরও অভিযোগ তোলা হয়, সরকারের নিরাপত্তা ব্যর্থতার পাশাপাশি বাজেট কাটছাঁট করে বিজ্ঞাপনে টাকা খরচ হচ্ছে। “মানুষ মারা যাচ্ছে, আর প্রধানমন্ত্রী বিদেশে বেড়াতে যাচ্ছেন,” বলেন শশী পাঁজা।

বিস্ফোরণের দিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) ভুটান সফরে রওনা দেওয়াকে “নাগরিকদের প্রতি চরম অবহেলা” বলে কটাক্ষ করে তৃণমূল। তাঁরা স্মরণ করিয়ে দেন, পুলওয়ামা হামলার দিনও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে ব্যস্ত।

২০২৩ সালের সংসদ ভবনে হামলা এবং মণিপুরে জাতিগত হিংসার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। “৮৬৪ দিন পর প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে গেলেন, এটা কি অবহেলা নয়?”-প্রশ্ন তাঁদের।

সাংবাদিক বৈঠকের শেষে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, “দেশ আর অজুহাত চায় না, নেতৃত্ব চায়। শহিদদের পরিবার ন্যায়বিচার চায়। অমিত শাহের পদত্যাগই এখন একমাত্র ন্যায্য পদক্ষেপ।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen