যাদবপুর স্টেশনে রামকমলের ছবির ব্যতিক্রমী প্রচার— ‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’ নিয়ে ট্রেন-যাত্রায় সায়নী–চান্দ্রেয়ী
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৪২: এক রোদঝলমলে দুপুর। সময় ঠিক ২টো ২৭ মিনিট। যাদবপুর স্টেশনের চিরচেনা ভিড়, ব্যস্ততার শব্দ আর ট্রেন ধরতে দৌড়োতে থাকা যাত্রীদের কোলাহলের মাঝে ঘটে গেল এক অনন্য মুহূর্ত। প্ল্যাটফর্মের দিকে এগিয়ে এলেন যাদবপুরের সাংসদ-অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ, সঙ্গে অভিনেত্রী চান্দ্রেয়ী ঘোষ এবং পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। তাঁদের দেখা মিলতেই যাত্রীদের চর্চায় নতুন মাত্রা।
কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ঢুকে পড়ল লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। ট্রেন থামতেই তিনজন দ্রুত উঠে পড়লেন কামরায়। যদিও প্রথমে অনেকে ভাবেন— হয়তো কোনও ব্যক্তিগত সফর। পরে জানা যায়, এটি তাঁদের নতুন ছবি ‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’-এর ব্যতিক্রমী প্রচারই বটে। আগামী ২১ নভেম্বর মুক্তির আগে ছবির সুর ও অনুভূতি বাস্তব যাত্রার সঙ্গেই মিশিয়ে দিতে চেয়েছেন নির্মাতারা।
ট্রেন ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেল পরিবেশও। সায়নী গেটের রড ধরে দাঁড়ালেন, বাতাসে উড়ে গেল তাঁর চুল— যেন পুরনো দিনের স্মৃতি ফিরিয়ে দিচ্ছে। চান্দ্রেয়ী গল্পে মাতলেন, রামকমলও যোগ দিলেন সেই আড্ডায়। কামরায় ওঠা-নামা করা মানুষের স্রোতের মাঝেই তিন শিল্পীর হাসি, গান আর ট্রেনের শব্দ মিলেমিশে তৈরি করল এক আলাদা আবহ। পুরো যাত্রাপথ যেন ক্যামেরার বাইরের এক ছোট্ট সিনেমা।
স্টেশনের যাত্রী থেকে ফটোগ্রাফার— সবার ক্যামেরা তাক করল তাঁদের দিকে। সায়নীর বেগুনি সালোয়ার আর কালচে সানগ্লাস আরও বাড়িয়ে দিলো তারকার উপস্থিতির ঝলক। কেউ ভিডিও করলেন, কেউ ছবি তুললেন— যেন সাধারণ দিনের ভিড়ও এদিন হয়ে উঠল উৎসবমুখর।
যাত্রাপথের মাঝেই রামকমল বললেন তাঁদের এই সফরের কারণ—
“প্রতিদিন লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে কত দিদি কলকাতায় আসেন, সংসার সামলাতে। তাঁদের ট্রেনে কাটানো সময়, তাঁদের গল্প— সেখান থেকেই জন্ম নিয়েছে আমাদের ছবি। তাই এই ট্রেনে চড়াই আমাদের শ্রদ্ধা তাঁদের প্রতি।”শেষমেশ ট্রেন পৌঁছল শিয়ালদহ স্টেশনে। যাত্রা শেষ হলেও থেকে গেল সেই স্বতঃস্ফূর্ত মুহূর্তগুলোর উজ্জ্বলতা— ঠিক সিনেমার মতো।
গল্পটির বিষয়বস্তু তিন দম্পতি, তিন রকম টানাপোড়েন নিয়ে।
ছবির প্রথম দম্পতি— ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। নিখাদ মধ্যবিত্ত সংসার তাঁদের। কিন্তু কৌশিকের হঠাৎ অসুস্থতা বদলে দেয় সংসারের সমীকরণ।
দ্বিতীয় দম্পতি— সঙ্গীতা সিনহা ও ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, সঙ্গে রয়েছেন চান্দ্রেয়ী ঘোষ। পরিবার বড় করার চিন্তায় থাকলেও ইন্দ্রনীলের দায়িত্ব আরও বেড়ে যায় বৃদ্ধ বাবার যত্ন নিতে গিয়ে।
তৃতীয় দম্পতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাজনন্দিনী ও জন ভট্টাচার্য, সঙ্গে সায়নী ঘোষ। নবদম্পতির ঘরে রাজনন্দিনীর ইচ্ছে— কাজের চাপ ভাগ করে নেওয়ার জন্য কাউকে পাওয়া।
আর এই অনন্য প্রচারেই স্পষ্ট, ‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’ শুধু একটি সিনেমা নয়, শহর-গ্রামের অগণিত অজানা গল্পের চলমান দলিল।