রাজা রামমোহন রায়কে “ব্রিটিশের এজেন্ট” বললেন BJP মন্ত্রী!

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ৯.৫০: মধ্যপ্রদেশের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ইন্দর সিং পরমার (Inder Singh Parmar) বীরসা মুন্ডা জয়ন্তী (Birsa Munda Jayanti) উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন, উনবিংশ শতকের প্রখ্যাত সমাজসংস্কারক রাজা রামমোহন রায় (Raja Rammohan Roy) নাকি ব্রিটিশ স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতেন এবং জাতিভেদকে আরও জোরালো করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য! পরমারের অভিযোগ, সেই সময় বাংলায় নাকি পশ্চিমী শিক্ষার মাধ্যমে ধর্মান্তরের এক “দুষ্টচক্র” চালানো হচ্ছিল এবং বহু ভারতীয় সংস্কারককে ব্রিটিশরা দাসত্বে আবদ্ধ করেছিল, এবং রাজা রামমোহন রায়ও তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
পরমারের এই বক্তব্যের উদ্দেশ্যে তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিরোধীরা, এবং স্পষ্ট ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা বলে দাগানো হয়েছে বিজেপির মন্ত্রীর এই বাঙালি মনীষী বিদ্বেষী মন্তব্যকে। বিজেপির রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য মহান ব্যক্তিত্বদের কলঙ্কিত করার অভিযোগ উঠছে। বিজেপি এখন বারবার সমাজসংস্কারক ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মন্তব্য ছড়িয়ে জনমত বিভ্রান্ত করতে চাইছে।
এর আগেও পরমার বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, ভারতকে নাকি ভাস্কো দা গামা (Vasco Da Gama) নয়, চন্দন নামের এক ব্যবসায়ী আবিষ্কার করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, দেশবাসীকে “ভুল ইতিহাস” পড়ানো হয়েছে।
সমাজসংস্কারের ইতিহাসে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান অতুলনীয়। সতি প্রথা বন্ধের আন্দোলন, নারী-স্বাধীনতা, যুক্তিবাদী ধর্মচর্চা এবং শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিতে তাঁর ভূমিকা আজও সর্বজনস্বীকৃত। তাঁর নেতৃত্বেই ১৮২৯ সালে সতি প্রথা নিষিদ্ধ হয়। রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, যে দলের পূর্বসূরি এবং ধারক সংগঠন স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশদের পক্ষ নিয়েছিল, সেই বিজেপির মন্ত্রী এবং মনীষীদের বিজেপির দালাল বলছেন।