অপারেশন সিঁদুরের আবহে পাকিস্তানে অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে চীন, দাবি মার্কিন রিপোর্টে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:২৪: ভারত-পাক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটই নাকি কাজে লাগিয়েছে চীন (China)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের US–China Economic and Security Review Commission-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত মে মাসে পাকিস্তানের মাটিকে কার্যত “লাইভ গবেষণাগার” বানিয়ে নিজেদের অত্যাধুনিক সামরিক হার্ডওয়্যার পরীক্ষা চালিয়েছে বেজিং (Beijing)।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, জে-১০ যুদ্ধবিমান, পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র, এইচকিউ-৯ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমসহ বেশ কিছু আধুনিক অস্ত্র প্রথমবার যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে চীন। বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সিস্টেমগুলির সক্ষমতা যাচাইয়ের এটাই প্রথম উদাহরণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে অস্ত্র পরীক্ষা চালালেও সেটি কতটা সফল-তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। পাকিস্তানের যুদ্ধ সক্ষমতার ভাঙাচোরা ছবি যে চীনের জন্যও অস্বস্তিকর, রিপোর্টেও তার ইঙ্গিত মিলেছে। ভারতীয় সেনাকে ঠেকাতে পাকিস্তান যে পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল, সেটি বিস্ফোরিতই হয়নি। সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে অক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে, চীনের তৈরি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানকেও ভারতীয় সেনা গুলি করে নামায়। ফলে পাকিস্তানের হাতে থাকা চীনা সরঞ্জামের কার্যকারিতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে।
রিপোর্টে আরও উল্লেখ, এই পরীক্ষার পর জুনে চীন পাকিস্তানকে ৪০টি জে-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ বিমান এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির প্রস্তাব দেয়। বিশ্লেষকদের মতে, নতুন প্রস্তাবগুলো স্পষ্টতই সামরিক বাজার দখলের কৌশল, তবে যুদ্ধক্ষেত্রে সাম্প্রতিক ব্যর্থতা বেজিংয়ের ভাবমূর্তিকেও ধাক্কা দিয়েছে।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরস্ত্র নাগরিককে খুন করে লস্কর-ঘনিষ্ঠ টিআরএফ। সেই ঘটনার জবাবেই ৭ মে ভোরে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গিঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় ভারত। পরে পাকিস্তান (Pakistan) সীমান্তবর্তী জনবহুল এলাকা ও সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায়। ভারত শুধু হামলা প্রতিরোধই করেনি, পাল্টা আঘাতেও পাকিস্তানের অন্তত ১১টি বিমান ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিহত হয় ১০০-র বেশি জঙ্গি এবং প্রায় ৩৫-৪০ পাক সেনা।
শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদের (Islamabad) অনুরোধে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা হয়। তবে মার্কিন রিপোর্ট বলে দিচ্ছে, এই সংঘর্ষের আড়ালে পাকিস্তানের ব্যর্থতা আর চীনের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা সমানতালে প্রকাশ পেয়েছে।