ভাতের থালা হাতে হাউহাউ করে কান্না, কমিশনকে দুষে ক্ষোভ উগরে দিলেন ‘কাজের চাপে অসুস্থ’ BLO সুমিতা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০.০০: ভাতের থালা হাতে হাপুস নয়নে কাঁদছেন এক মহিলা। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে হুগলির পান্ডুয়া ব্লকের (Pandua, Hooghly) বাঁটিকা বৈচী গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষিকা সুমিতা মুখোপাধ্যায়কে (Sumita Mukherjee), যিনি বর্তমানে ওই পঞ্চায়েতের ৪১ নম্বর বুথের বিএলও (BLO)।
১৩০০টি এসআইআর ফর্মের মধ্যে মাত্র ৩০০টি আপডেট করায় স্থানীয় প্রশাসন তাঁকে ‘Low performer’ বলে চিহ্নিত করেছে। অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার তাঁকে বিডিও অফিসে (BDO office) দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁর কথায় কেউ মনোযোগ দেননি। বাড়ি ফিরে পরিবারের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুমিতা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রযুক্তিগত জটিলতা ও সার্ভারের সমস্যার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারছিলেন না সুমিতা। সেই চাপেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে সুমিতা বলেন, “শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও এসআইআর-এর কাজ করেছি। ৩০০ জনের নাম আপডেট করেছি। তবুও ব্লক অফিসে ডেকে সার্ভার সমস্যার মাঝেই কাজ করতে বলা হয়। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে বসে ছিলাম। খেতেও পাইনি। এমন অবস্থা হয়েছিল যে মনে হচ্ছিল নিজেকে শেষ করে দিই।”
তিনি আরও বলেন, “আমার সহযোগী বিএলও বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে না এলে কী হত বলতে পারি না। আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে।” চুপ করে থাকেননি সুমিতা। সরাসরি নির্বাচন কমিশনকেই দুষে বলেন, “কমিশনের কোনও সঠিক পরিকল্পনা নেই। বারবার সিদ্ধান্ত বদল করছে। বিএলও-রাই ফিল্ডওয়ার্ক করছেন, তাঁদের সমস্যার কথা কেউ ভাবছেন না। এটি শুধু আমার ঘটনা নয়, বহু বিএলও (BLO) একই সমস্যায় পড়ছেন।”
তিনি দাবি করেন, কাজের চাপে বহু বিএলও অসুস্থ হয়েছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছেন। সুমিতার স্বামী বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হত এমন অবস্থা হয়েছিল। ওষুধ আর খাবার খাইয়ে কোনও রকমে সামলে দিয়েছি। সমস্যাটা সার্ভারের। তার দায় চাপানো হচ্ছে ওর উপর।”
তিনি অভিযোগ করেন, টার্গেট পূরণ করেও হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বহু বিএলও। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী ও বিএলও ডিউটি প্রতিরোধ মঞ্চের আহ্বায়ক অনিমেষ হালদার তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে এই ভিডিও শেয়ার করেন। বিষয়টি নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক মহলে।