পাঞ্জাবের গ্রাম থেকে বলিউডের হি-ম্যান, ৮৯ বছরে থেমে গেল কিংবদন্তি ধর্মেন্দ্রর পথচলা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:০০: বলিউডের ইতিহাসে কিছু নাম সময়কে ছাপিয়ে যায়। তাঁদের জীবন শুধু সিনেমার সাফল্যে নয়, ব্যক্তিত্ব, প্রেম, সংগ্রাম আর মানবিকতায় কিংবদন্তি হয়ে ওঠে। ধর্মেন্দ্র (Dharmendra) সেই তালিকার প্রথম সারিতে। সোমবার ৮৯ বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসান হয়। খবর ছড়াতেই মুম্বইয়ের জুহুতে তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হতে থাকেন বলিউডের তারকারা। শ্মশানে পৌঁছতে দেখা যায় হেমা মালিনীকে। বাড়ির সামনে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে, তবে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি।
১৯৩৫ সালে লুধিয়ানার সাহনেওয়ালে জন্ম। গ্রামের সিনেমা হল তাঁর স্বপ্নের প্রথম জানালা। সেখান থেকে ফিল্মফেয়ার ট্যালেন্ট কনটেস্ট জেতা, আর ১৯৬০-এ ‘দিল ভি তেরা হম ভি তেরে’ দিয়ে বলিউডে যাত্রা।
প্রথম সাফল্যের পর একে একে ‘শোলা অউর শবনম’, ‘বন্দিনী’, ‘ফুল অউর পাথ্থর’ আর ‘সত্যকাম’ তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করে। ষাট ও সত্তরের দশক জুড়ে শক্তি, রোম্যান্স আর সংবেদনশীলতার মিশেলে আলাদা ধারার নায়ক হয়ে ওঠেন তিনি।
‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘শোলে’- প্রতিটি ছবিতে তিনি পর্দায় নতুন এক পুরুষচরিত্র তৈরি করেছেন।
হেমা মালিনীর (Hema Malini) সঙ্গে তাঁর প্রেম আজও বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত গল্পগুলোর একটি। ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’-এর সেট থেকেই শুরু। পরে ‘শোলে’, ‘সীতা অউর গীতা’, ‘ড্রিম গার্ল’-একসঙ্গে কাজের মধ্য দিয়ে গাঢ় হয় সম্পর্ক।
ধর্মেন্দ্রর প্রথম সংসার থাকা সত্ত্বেও সম্পর্ক থামেনি। সমাজের কটূক্তি, সংবাদমাধ্যমের নজর-সব পেরিয়ে জীবনসঙ্গী হন দুজনেই।
হেমা মালিনী লিখেছিলেন, “তিনি একই সঙ্গে শক্ত আর কোমল। কঠিন সময়ে পাহাড়ের মতো পাশে থেকেছেন।” আজও তাঁদের দুই মেয়ে ঈশা ও অহনা বলেন, বাবা এখনো মায়ের জন্য শায়রি লেখেন।
‘সত্যকাম’-এর আদর্শবাদী চরিত্র থেকে ‘অনুপমা’-র লেখক-ধর্মেন্দ্র প্রতিটি চরিত্রে মানবিকতার ছাপ রেখে গেছেন।
‘শোলে’-র ভিরু চরিত্র আজও কালজয়ী। সংলাপ, “বসন্তি, ইন কুত্তোঁ কে সামনে মৎ নাচনা”-আজও ভারতীয় পপ-সংস্কৃতির অংশ।
অভিনেতা হিসেবে সাফল্য পেলেও মানুষ হিসেবে ছিলেন শান্ত, বিনয়ী। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “দেনেওয়ালে নে সব কিছু দিয়া, যা চাইনি, শুধু সেটাই পাইনি।” তাঁর জীবনের দর্শন ছিল এই সরলতা।