পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে SIR আতঙ্কে আত্মঘাতী মহিলা, এলাকায় চাঞ্চল্য
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৪৫: রাজ্যে থামছেই না এসআইআর (SIR) আতঙ্কে মৃত্যু মিছিল। এবার পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) ভাতার থানার ভূমশোর গ্রামে এসআইআর (SIR) আতঙ্কের জেরে এক মহিলার আত্মহত্যায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন মুস্তরা খাতুন কাজি। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে। শনিবার সকালে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠিয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, মাঝবয়সী মুস্তরা খাতুন অবিবাহিত ছিলেন এবং বাপেরবাড়িতেই থাকতেন। শুক্রবার রাতে তিনি আচমকাই নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে ভাতার ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের দাবি, এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি অস্বাভাবিক আতঙ্কে ভুগছিলেন। যদিও পরিবারের বাকি সদস্যদের মতোই তাঁর নামও ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় রয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রতিবেশীরা তাঁকে বারবার আশ্বস্ত করেছিলেন যে কোনও সমস্যায় তাঁকে পড়তে হবে না। তবুও তাঁর ভয় কাটছিল না। শুক্রবার তিনি এসআইআর ফর্ম (SIR form) জমা দিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। এরপরও তাঁর অস্থিরতা বাড়ছিল। পরিবারের অভিযোগ, সেই আতঙ্ক থেকেই তিনি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেন।
ভাতার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সাইদুল হক জানান, তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল যে কোনও আশঙ্কার কারণ নেই। তবুও আতঙ্কে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন। সাইদুল হকের অভিযোগ, “নির্বাচন কমিশন অপরিকল্পিতভাবে এই এসআইআর প্রক্রিয়া চাপিয়ে দেওয়ায় মানুষ মানসিক চাপে ভুগছেন, যার ফলেই এমন দুঃখজনক ঘটনা ঘটল।”
এলাকার বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী শনিবার মৃতার পরিবারের বাড়িতে গিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) বিরুদ্ধে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, প্রয়োজন হলে আন্দোলনে নামবে দল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন বলেও সূত্রের খবর। তাঁর নির্দেশে যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh) সন্ধ্যায় ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন।