Ditwah Cyclone: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়াহ’, জারি লাল সতর্কতা, বাতিল ৫৪টি ফ্লাইট

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০.৩০: ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়াহ’ তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে, যার প্রভাবে উপকূলীয় তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং সংলগ্ন অন্ধ্রপ্রদেশের দক্ষিণ অংশে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। যদিও ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কাছাকাছি এসে দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং এর স্থলভাগে প্রবেশের সম্ভাবনা কম। তামিলনাড়ু-পুদুচেরীর উপকূল ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে। ওই অংশের সমুদ্রে গত দু’দিন ধরে ঝড়ের তাণ্ডব চলছে। ঘূর্ণিঝড় যত এগোচ্ছে, তত তার শক্তি বাড়ছে। বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা।
মৌসম ভবন এর আগে জানিয়ছিল, রবিবার সকালের মধ্যে তামিলনাড়ু-পুদুচেরী-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে দিতওয়াহ। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আরও কাছে এগিয়ে আসার পর তার গতিবিধি নতুন করে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সকালে মৌসম ভবন নতুন বিবৃতিতে জানিয়েছে, দিটওয়া স্থলভাগে প্রবেশ করবে না। তা স্থলভাগের খুব কাছ দিয়ে সমুদ্র ধরেই এগিয়ে যাবে। এই মুহূর্তে তার অবস্থান দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে কারইকাল থেকে ৯০ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর পূর্ব, বেদারান্নিয়াম থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব, পুদুচেরী থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, শ্রীলঙ্কার জাফনা থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর পূর্ব এবং চেন্নাই থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব।
দিতওয়াহর প্রভাবে সমুদ্রে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। মৎস্যজীবীদের জন্য দু’দিন আগে থেকেই জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। মৌসম ভবনের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে তামিলনাড়ু-পুদুচেরি উপকূলে। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছোতে পারে ৯০ কিলোমিটারে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি পরিবর্তনের পর ঝড়ের গতিতেও তারতম্য ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই দুর্যোগের কারণে রামনাথপুরম ও নাগাপট্টিনম জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কডালোর, নাগাপট্টিনম, মায়িলাদুথুরাই, চেনগালপট্টু এবং পুদুচেরি-কারাইকাল অঞ্চলসহ একাধিক এলাকায় অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির জন্য লাল সতর্কতা (Red Alert) জারি করা হয়েছে। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের কারণে মান্দাপামের কাছে নোঙর করা কিছু মাছ ধরার নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেদারানিয়ামে অবিরাম বৃষ্টির ফলে প্রায় ৯,০০০ একর লবণের জমিতে জল জমে নুন উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
এদিকে, তামিলনাড়ুর রাজস্ব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী কে. রামচন্দ্রন জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রস্তুত। এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর প্রায় ২৮টি দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং অতিরিক্ত ১০টি দল আনার পরিকল্পনা চলছে।
এখন পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর না থাকলেও, ১৬টি গবাদি পশু মারা গেছে এবং ২৪টি কুঁড়েঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মোট ৫৪টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষিণ রেলওয়েও ট্রেন চলাচলের সময়সূচিতে পরিবর্তন এনেছে।
শ্রীলঙ্কার উপকূলের কাছে প্রবল তাণ্ডব চালিয়েছে দিটওয়া। সেখানে মৃতের সংখ্যা শতাধিক। তার পর তা ক্রমে উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে ভারতের উপকূলের কাছাকাছি এসেছে। এর জন্য তামিলনাড়ু, পুদুচেরী এবং অন্ধ্রপ্রদেশে একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছে সরকার। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। তামিলনাড়ুর চার জেলায় জারি করা হয়েছে চূড়ান্ত (লাল) সতর্কতা। স্কুল, কলেজ বন্ধ। পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব আপাতত পড়ছে না।