Primary TET Verdict: কোন যুক্তিতে অভিজিতের নির্দেশ খারিজ, কী পর্যবেক্ষণ ডিভিশন বেঞ্চের?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:০০: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের বেঞ্চ জানায়, দুর্নীতি হয়েছে বটে, তবে একসঙ্গে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা যাবে না। প্রায় ৯ বছর ধরে তাঁরা চাকরি করছেন। চাকরি বাতিল করলে তাঁদের পরিবারও বিপাকে পড়বে। মানবিক কারণেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ করেছে আদালত।
*প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রায়ে জানিয়েছিলেন*
* কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি।
* ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের আনুষ্ঠানিক নিয়োগপত্র ছিল না।
* অ্যাপটিটিউড টেস্টে নম্বর দেওয়ার কোনও নির্দেশিকা ছিল না।
* ইন্টারভিউয়ের মূল্যায়ন ছিল অবাস্তব ও অযৌক্তিক।
* সিবিআই ও ইডির তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।
* সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থীরা বেশি নম্বর পেলেও সাধারণ তালিকায় জায়গা পাননি।
* প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কোনও সিলেকশন কমিটি গঠন না করে বাইরের সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিল।
* নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির দুর্গন্ধ পাওয়া গিয়েছে।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ
ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি। তবে এই মামলার তথ্য থেকে ‘ব্যাপক অনিয়ম’ প্রমাণিত হয়নি। আদালতের মতে
১) কয়েকজন ব্যর্থ প্রার্থীর অসন্তোষের কারণে ৩২ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নষ্ট করা যায় না।
২) চাকরি বাতিল করলে নির্দোষ শিক্ষকদের অকারণে অপমান ও কলঙ্ক সহ্য করতে হবে।
৩) তদন্তে দেখা গেছে, মোট ২৬৪ জন প্রার্থীর ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। তাঁদের অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে উত্তীর্ণ করা হয়েছিল। আরও ৯৬ জন ন্যূনতম যোগ্যতার নম্বর না পেয়েও নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
৪) কিছু প্রার্থীর সমস্যা থাকলেও পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ভুয়ো বলা যায় না।
৫) নতুন পরীক্ষার নির্দেশ দিলে তা অন্যায় পরিস্থিতি তৈরি করবে। ৯ বছর চাকরি করার পর হঠাৎ চাকরি কেড়ে নেওয়া হলে শিক্ষক ও তাঁদের পরিবার অস্তিত্বসঙ্কটে পড়বেন।
ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করেছে, দুর্নীতির তদন্ত চলবে। তবে চাকরি বাতিলের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আইনি ভিত্তি নেই। তাই ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বহাল থাকবে। আদালতের মতে, ন্যায়বিচারের সময় আদালতকে সীমার মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। প্রমাণ ছাড়া পুরো নিয়োগ বাতিল করা যায় না। তবে তদন্ত চলবে বলেই আদালত জানিয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে তাঁদের বিষয়ে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।