বিজেপি-কে শূন্য করে দিন, বহরমপুরের জনসভা থেকে বার্তা মমতার

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:৪০: মুর্শিদাবাদে জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে (BJP) তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যে এসআইআর (SIR) নিয়ে চলমান আতঙ্ক-মৃত্যু, রাজ্যের বঞ্চনা এবং সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ, সব মিলিয়ে বিজেপিকে সরাসরি কড়া বার্তা দিলেন তিনি।
বিহার ভোটের প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘বিহারে চালাকি করে চারটে করে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল। নির্দলেরা ভোট কাটলে লোকসান আপনার। সুবিধা হবে বিজেপি-র।’’
সভামঞ্চে মমতা বলেন, এসআইআর-এর আবহে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই হিন্দু। তাঁর কথায়, যারা নিজেদের স্বার্থে ভয় ছড়াচ্ছে, তারা যেন নিজেরাই নিজেদের ভিত্তি কেটে না ফেলে। পাশাপাশি জানান, যতক্ষণ না সবার ভোটার তালিকায় নাম ওঠে, ততক্ষণ তিনি নিজের নামও তুলবেন না। প্রতিটি বুথে সহায়তা শিবির চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপিকে (BJP) উদ্দেশে তিনি স্পষ্ট বলেন, বাংলায় কোনও অবস্থাতেই ডিটেনশন ক্যাম্প হতে দেবে না রাজ্য। অভিযোগ তোলেন, বিজেপি বাংলাবিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে চলেছে। ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি (Bangladeshi) বলে অপমান করা হচ্ছে, পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrant workers) হয়রানির শিকার হচ্ছেন, এমনটাই বলেন তিনি।
এসআইআর (SIR) প্রসঙ্গে মমতার প্রশ্ন, যে সব রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় নেই, সেখানেই কেন ভোটের আগে এ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে? অসম বা ত্রিপুরায়ও সীমান্ত রয়েছে, সেখানে এসআইআর হচ্ছে না কেন? তাঁর দাবি, বাংলায় আতঙ্ক ছড়ানোই বিজেপির লক্ষ্য।
তিনি ঘোষণা করেন, এসআইআর আবহে মৃত ৪০ জনের পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা করে দেবে রাজ্য। যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদেরও সাহায্য দেওয়া হবে।
এদিনই তিনি জানান, সাগরদিঘির নতুন ইউনিট থেকে আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে। ফরাক্কায় ড্রেজিং না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, নদীভাঙন রোধে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে ১৫০০ কোটি টাকার পরিকল্পনা পাঠানো হলেও কেন্দ্রের অনুমোদন মেলেনি। তবু রাজ্যের নিজস্ব তহবিলে ১৮৯টি কাজ শেষ হয়েছে। নদীভাঙন রোধে ১৩৬ কোটি টাকায় ১৭টি প্রকল্প চলছে, আরও ২০০ কোটি বরাদ্দ হয়েছে।
ইতিহাসের প্রসঙ্গ তুলে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বার্তা দেন তিনি। বলেন, মুর্শিদাবাদের মানুষ বিভেদের রাজনীতি মানবেন না। সিরাজউদ্দৌলার স্মৃতি, নবাবদের ঐতিহ্য, বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান- এই জেলার পরিচয় ঐক্য, বিভাজন নয়।
এদিন বাংলায় এনআরসি (NRC) প্রসঙ্গে গর্জে উঠলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় এনআরসি করতে দেব না। আমার গলা কেটে দিলেও এখানে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেব না, কাউকে তাড়াব না। রোহিঙ্গা বাংলায় কোথা থেকে আসবে? রোহিঙ্গা তো আসবে মণিপুর, মিজ়োরাম, ত্রিপুরা দিয়ে। সীমান্ত, বিএসএফ, পাসপোর্ট, ভিসা— সবই তো কেন্দ্রের হাতে। এখন দোষ দিলে হবে?’’