SIR: ঘন ঘন বাড়ি বদলে বিপাকে শহরের ভাড়াটেরা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৩৫: SIR প্রক্রিয়া শুরু হতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কলকাতার ভাড়াটিয়াদের (Tenant) একাংশের। জীবিকা বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যাঁদের ঘন ঘন বাসস্থান পরিবর্তন করতে হয়, তাঁরাই বর্তমানে সবথেকে বেশি প্রশাসনিক জটিলতার মুখে পড়ছেন। ১১ মাসের চুক্তিতে থাকা ভাড়াটেরা নতুন জায়গায় গিয়ে ভোটার তালিকায় (Voter list) নাম তুলতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন।
কলকাতা (Kolkata) ও সংলগ্ন শহরতলিতে এখন দীর্ঘমেয়াদী ভাড়ার চল প্রায় নেই বললেই চলে। বাড়িওয়ালারা সাধারণত ১১ মাসের চুক্তিতেই ঘর ভাড়া দেন। চুক্তি শেষ হলে হয় নতুন করে চুক্তি রিনিউ করতে হয়, নয়তো বাসা বদলাতে হয়। আর এই বাড়ি বদলানোর ফলেই তৈরি হচ্ছে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত জটিলতা। যাঁরা বাড়ি বদল করে অন্য এলাকায় চলে যাচ্ছেন, তাঁদের পুরোনো কেন্দ্রের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে নতুন ঠিকানায় নাম তোলার ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে।
শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলাররা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন সকালে অফিস খুললেই বহু মানুষ ভিড় করছেন বাড়ি বদল সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে। নতুন ঠিকানায় ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার পদ্ধতি কী, তা জানতে চাইছেন তাঁরা। রাসবিহারী থেকে সম্প্রতি শ্যামবাজারে উঠে আসা স্বরূপ জানা বলেন, “ভোটার তালিকায় নতুন করে নাম তোলার প্রক্রিয়া শুরু হলে আমাকে আবার আবেদন করতে হবে। এতদিন আমরা পুরোনো জায়গায় ভোট দেওয়ার সুযোগ পেতাম, এখন নতুন নিয়মে আবার দৌড়ঝাঁপ করতে হবে।”
একই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন কসবা থেকে ঠাকুরপুকুরে বাসা বদল করা রনি সাহাও। তাঁর কথায়, “নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য ফের আবেদনপত্র পূরণ ও জমা করার কথা ভাবলেই দুশ্চিন্তা হচ্ছে।”
বিষয়টি নিয়ে পুরসভার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “অনেকেই বাড়ি বদল করার পরে সমস্যায় পড়েছেন। কিন্তু তাঁদের নতুন জায়গায় ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্যে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) নির্ধারিত নির্দিষ্ট আবেদনপত্র পূরণ করতেই হবে। এই সমস্যার সমাধান পুরসভা সরাসরি করতে পারবে না।”
সমস্যার এখানেই শেষ নয়। ঘন ঘন বাসা বদল করতে গিয়ে অনেকেরই ভোটার, আধার, প্যান কার্ড বা বার্থ-ডেথ সার্টিফিকেটের মতো অত্যন্ত জরুরি নথি হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান SIR আবহে সেই সব হারানো নথি (Documents) কী করে দ্রুত ফিরে পাওয়া যাবে, তা জানতে এস এন ব্যানার্জি রোডের পুরসভা সদর দপ্তর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বরো অফিসগুলিতে ছুটছেন সাধারণ মানুষ। কাউন্সিলার ও বিধায়কদের অফিসেও লম্বা লাইন পড়ছে। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে নথি পুনরুদ্ধারের সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকায় পুরকর্মীরাও দিশাহারা মানুষদের সদুত্তর দিতে পারছেন না। সব মিলিয়ে, বাড়ি বদল ও ভোটার তালিকার গেরোয় বর্তমানে নাজেহাল শহরের সাধারণ ভাড়াটেরা।