Parliament Winter Session: গাছাড়া কংগ্রেস, মোদী সরকারকে চাপে ফেলতে বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব দিচ্ছে তৃণমূল

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:১২: বাংলার তূণমূল সংসদেরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সংসদে, শীতকালীন অধিবেশনে কার্যত মোদী সরকারকে নাজেহাল করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সাংসদরা। দেখিয়ে দিচ্ছেন বিরোধীদের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত। সেখানে কংগ্রেস সাংসদেরা গরহাজিরা!
কংগ্রেসের বদলে কীভাবে সংসদে বিরোধীদের নেতৃত্বে উঠে আসছে তৃণমূল, তা একটি উদাহরণেই স্পষ্ট। সভার কার্য উপদেষ্টা কমিটি (BAC) বৈঠকে সরকারের প্রস্তাব মেনে কংগ্রেস একদিনেই বন্দেমারতমের সার্ধশতবর্ষ, নির্বাচনী সংস্কার (SIR) নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়ে গিয়েছিল। তৃণমূল দাবি জানায়, দু’দিন আলোচনা করতে হবে। সেই প্রস্তাব সমর্থন করেছে এআইএডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি।
লোকসভা বা রাজ্যসভা, কংগ্রেস সাংসদদের উপস্থিতির হার খুব খারাপ। চারদিন হয়ে গেলেও সংসদের শীতকালীন অধিবেশন দেখা নেই হাত শিবিরের বহু সাংসদের।সোনিয়া, রাহুল, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এমনকি প্রবীণ মল্লিকার্জুন খাড়গেরা আসছেন। কিন্তু কম বয়সি কংগ্রেস সাংসদেরাই গরহাজির। সূত্রের খবর, এতে ক্ষুব্ধ খাড়গে এবং রাহুল। দলীয় সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, দলের বৈঠকে খাড়গে বলেছেন, আমাদের লোকজন আসছে না কেন? সরকারকে চেপে ধরতে হলে সংসদে পুরো শক্তি দিয়ে নামতে হবে।
অন্যদিকে, তৃণমূলের পারফরম্যান্স অত্যন্ত ভাল। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসার কারণে বিদেশে। কিন্তু লোকসভায় লিখিত প্রশ্নে সরকারকে চেপে ধরছেন তিনি। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ‘রিভ্যাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কিমে’ টাকা দিতে কেন বিলম্ব, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল অভিষেকের। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক উত্তরে জানিয়েছেন, এখনও অবধি গত তিন বছরে দেশে সব মিলিয়ে ৩৭ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যা অনুমোদিত বরাদ্দের ৩৮ শতাংশ। বাংলাকে ৬,৪২৩ কোটি টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তিন বছরে মাত্র ৮৭১ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষদস্তিদার যেমন সরকার, স্পিকারের ডাকা বৈঠকে যাচ্ছেন, প্রতিবাদ করছেন, দাবি আদায় করছেন। প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং জিরো আওয়ার দলের বাকি সাংসদরা সরব হচ্ছেন। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে জোড়া ফুলের সাংসদেরা সরকারকে চেপে ধরছেন। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার বাংলার বঞ্চনার ইস্যুতে সরব হয়েছে তৃণমূল। বিজয় চক থেকে সংসদ পর্যন্ত মিছিল হয়েছে। ধর্ণা, বিক্ষোভ তো চলছেই। বাংলার প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া মেটাক মোদী সরকার, এই দাবিতেই চলছে লড়াই।
জিরো আওয়ারে সরব হয়েছেন অসিত কুমার মাল। ১০০ দিনের কাজের পারিশ্রমিক দৈনিক ৬০০ টাকার করার দাবি জানান বীরভূম জেলার এই সাংসদ। আজ শুক্রবার রাজ্যসভায় মনরেগা নিয়ে প্রশ্ন করবেন ডেরেক। বৃহস্পতিবার লোকসভায় বিজেপিকে বাংলা বিরোধী, নারী বিদ্বেষী, মণীষী বিদ্বেষী, গরিব বিরোধী বলেও তোপ দাগেন আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ। তিনি বলেন, রাজা রামমোহন রায়কে ব্রিটিশদের দালাল বলে অপমান করেছে বিজেপি। বাংলার মানুষ মণীষীদের অপমান বরদাস্ত করবে না। আগামী সপ্তাহে লোকসভায় বন্দেমাতরমের সার্ধশতবর্ষ নিয়ে তৃণমূলের পক্ষে বলবেন কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং মহুয়া মৈত্র। রাজ্যসভায় বলবেন সুখেন্দুশেখর রায় এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে লোকসভায় বলবেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শতাব্দী রায়।